নেদারল্যান্ডসে ঢুকতে পারবে না ইসরায়েলি ২ মন্ত্রী, জানাল ডাচ সরকার


নেদারল্যান্ডস ইসরায়েলের দুই কট্টর ডানপন্থী মন্ত্রীকে তাদের দেশে ঢুকতে দেবে না। এই দুই ইসরায়েলি মন্ত্রী হলেন—অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মতরিচ ও জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার গভির। গাজায় জাতিগত নির্মূলের ডাক দেওয়ায় নেদারল্যান্ডস তাদের ‘অবাঞ্ছিত ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে। ডাচ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে এই খবর জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার রাতে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প এ সিদ্ধান্তের পক্ষে ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, এই দুই মন্ত্রী ‘বারবার ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ছড়িয়েছেন, অবৈধ বসতি গড়ার পক্ষে কথা বলেছেন এবং গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছেন।’
ওই দিন ডাচ সরকার একটি চিঠিতে জানায়, তারা ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে গাজার ‘অসহনীয় ও অযৌক্তিক’ পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বেন গভির লেখেন, ‘আমাকে যদি সারা ইউরোপ থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়, তবুও আমি কাজ চালিয়ে যাব। হামাসকে শেষ করার এবং আমাদের সেনাদের পক্ষে কথা বলার কাজ আমি চালিয়ে যাব।’
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী ডিক স্কফ বলেছেন, ইসরায়েল যদি গাজায় মানবিক সহায়তা ঢুকতে বাধা দেয়, তাহলে তারা আরও কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘হরাইজন’ নামের গবেষণা কর্মসূচি থেকেও ইসরায়েলকে বাদ দেওয়ার পক্ষে তারা অবস্থান নেবে।
গভির এর আগেও গাজায় ‘সম্পূর্ণ অবরোধ’ আরোপের দেওয়ার দাবি তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় কোনো নিরীহ মানুষ নেই।’ আর স্মতরিচ গাজা পুনর্দখল করে সেখানকার ফিলিস্তিনি জনগণকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তাদের এমন বক্তব্য অনেকেই ‘সহিংসতার উসকানি’ ও ‘গণহত্যার আহ্বান’ বলে সমালোচনা করছেন।
ইসরায়েল গত ১৮ বছর ধরে নানা উপায়ে গাজা অবরোধ করে রেখেছে। চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে তারা সব সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে খাদ্য, ওষুধসহ সাহায্যের ট্রাক ঢুকতে পারছে না। মে মাসের শেষ দিকে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ কিছু ত্রাণ বিতরণ শুরু করে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর ২০২৩ থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে অন্তত ১৪৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ৮৮ জনই শিশু। এ পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।