শিরোনাম
গাছে ঝুলিয়ে কুকুর পিটিয়ে হত্যামাটিতে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারে প্রাণ গেল খামারিরচট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে বিপুল পরিমাণ সিগারেট ও ক্রিম জব্দওভালে মাঠকর্মীর সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি গম্ভীরেরওসির বিরুদ্ধে ছেলেকে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ তুলে অঝোরে কাঁদলেন মাঠিকাদার অফিসে ডাকাতি, সাড়ে ১৭ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ১০ আগস্ট জাতীয় নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা দেবে ইসি, ৪৫ লাখ নতুন মুখবেলকুচিতে সরকারি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৯জুলাই সনদে ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ভূমিকা তুলে ধরতে হবে: শাকিল উজ্জামানগাইবান্ধায় অবৈধ চারটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা

বেইজিংয়ে ভয়াবহ বৃষ্টি ও বন্যায় ৩৪ জনের মৃত্যু

বেইজিংয়ে ভয়াবহ বৃষ্টি ও বন্যায় ৩৪ জনের মৃত্যু

চীনের রাজধানী বেইজিং ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে টানা ভারী বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও কয়েকজন। এরই মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার বাসিন্দাকে। চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এই বৃষ্টি ও বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেইজিংয়ের মিয়ুন জেলা। স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত এ জেলাতেই প্রাণ হারিয়েছেন ২৮ জন। ইয়ানচিং জেলায় মারা গেছেন আরও দুজন। বেইজিংয়ের শহরতলির এই দুই এলাকাই শহরের কেন্দ্র থেকে অনেকটা দূরে।

এ ছাড়া, রাজধানী সংলগ্ন হেবেই প্রদেশের একটি পার্বত্য এলাকায় ভূমিধসে মারা গেছেন আরও ৪ জন। সেখানে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৮ জন। চীনা সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর উত্তরের জেলাগুলোতে টানা বৃষ্টিতে সোমবার পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫৪৩ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে যোগাযোগব্যবস্থার। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ১৩৬টি গ্রাম।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং সোমবার রাতে এক নির্দেশনায় সম্ভাব্য প্রাণহানি কমাতে ‘সর্বোচ্চ মাত্রার উদ্ধার অভিযান’ চালানোর নির্দেশ দেন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং বলেন, মিয়ুন জেলায় ‘গুরুতর প্রাণহানি’ ঘটেছে।

বৃষ্টির কারণে বিপদের আশঙ্কায় বেইজিংয়ে জারি করা হয় সর্বোচ্চ মাত্রার সতর্কতা। স্থগিত করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম, বন্ধ রাখা হয় সব ধরনের নির্মাণকাজ ও বাইরের পর্যটন। নাগরিকদের ঘরে অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

বন্যার কারণে মিয়ুন জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ জলাধারে পানির স্তর বিপজ্জনকভাবে বেড়ে যায়। ১৯৫৯ সালে নির্মাণের পর থেকে এত পানি আগে কখনো জমেনি সেখানে। ফলে বাধ্য হয়ে জলাধার থেকে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এর ফলে, নিচু এলাকাগুলোর নদীগুলোর পানি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মিয়ুন জলাধারে প্রায় ৭৩০ মিলিয়ন কিউবিক মিটার পানি প্রবাহিত হয়েছে, যা চীনের উত্তরাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় জলাধারের জন্যও রেকর্ড সদৃশ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে রয়েছে তাইশিতুন শহর, যা বেইজিংয়ের কেন্দ্র থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত। সেখানে রাস্তায় পানি থই থই করছে, দেয়ালে কাদার স্তর জমে আছে, উপড়ে পড়া গাছের গোড়াগুলো ওপরে এসে পড়েছে। স্থানীয় এক দোকানমালিক জুয়াং ঝেলিন বলেন, ‘বন্যার পানি এত দ্রুত এসে পড়ল, কিছু বোঝার আগেই পুরো এলাকা ডুবে গেল।’

প্রচণ্ড এই দুর্যোগের মধ্যে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার জরুরি তহবিল হিসেবে হেবেই প্রদেশকে ৫ কোটি ইউয়ান (প্রায় ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) সহায়তা দিয়েছে এবং উচ্চ পর্যায়ের উদ্ধারকারী দল পাঠিয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালেও বেইজিংয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। সে সময়ও বহু মানুষ নিহত হন এবং প্রায় ১০ লাখ মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়। তখনো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল হেবেই প্রদেশ। সমালোচনার মুখে পড়েছিল চীনা কর্তৃপক্ষ। কারণ, অনেকেই অভিযোগ করেন, রাজধানীকে রক্ষায় চারদিকে একটি ‘মানবসৃষ্ট পরিখা’ গড়ে তোলা হয়েছিল, যার ফলে হেবেইয়ের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button