শিরোনাম
হবিগঞ্জে ফেনসিডিলের মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর, ঠেকাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশওগ্রেপ্তার ৯ শিশুর বিষয়ে তদন্তের নির্দেশরাষ্ট্রের মূলনীতি নিয়ে মতানৈক্য, ৩১ জুলাইয়ের আগেই সিদ্ধান্ত জানাবে কমিশনজুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের পর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা যেতে পারে: আখতার হোসেনমাদারগঞ্জ মডেল থানার সেই এসআইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুচালককে মারধরের জেরে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে বাস চলাচল বন্ধশেরপুরে বিএনপির সদর উপজেলা ও শহর কমিটি ঘোষণাসিঙ্গিয়া স্টেশনের সব ফ্যান খুলে নিয়ে গেল রেলওয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ, দুর্ভোগে যাত্রী-কর্মীরাচামুরখানে ডিএনসিসির নতুন কবরস্থান উদ্বোধন

মাশাআল্লাহ কী, এর সঠিক ব্যবহার কীভাবে করতে হয়

মাশাআল্লাহ কী, এর সঠিক ব্যবহার কীভাবে করতে হয়

ইসলামের প্রিয় পরিভাষাগুলোর মধ্যে ‘মাশাআল্লাহ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অর্থপূর্ণ শব্দ। এটি শুধু একটি সাধারণ বাক্য নয়, বরং এর মাধ্যমে আমাদের মনোভাব এবং বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটে। তবে, এই শব্দটি কোথায় এবং কখন বলা উচিত, তা জানতে হবে।

বর্তমানে, অনেকেই মাশাআল্লাহ শব্দটি অহেতুক, বা ভুল জায়গায় ব্যবহার করে থাকেন; যার ফলে তার প্রকৃত মাহাত্ম্য ও উদ্দেশ্য হারিয়ে যায়। একজন মুসলিম হিসেবে, এই শব্দের সঠিক ব্যবহার জানা এবং তা অনুসরণ করা আমাদের দায়িত্ব।

‘মাশাআল্লাহ’ অর্থ ও ব্যবহার

আরবি শব্দ ‘মাশাআল্লাহ’-এর অর্থ ‘আল্লাহ যা চান’ বা ‘আল্লাহ যেমন চেয়েছেন।’ এটি ইসলামে একটি সম্মানিত এবং বরকতময় শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা এবং ধন্যবাদ প্রকাশ করে।

প্রতিদিনের জীবনে যখন আমরা কোনো ভালো কাজ বা ভালো কিছু দেখি, তখন মাশাআল্লাহ বলার মাধ্যমে আমরা সেই ভালো কাজের প্রতি সম্মান ও প্রশংসা জানাই এবং নিজেদের হিংসা বা মন্দ দৃষ্টির প্রভাব থেকে রক্ষা করি। এটি মূলত আমাদের মনের শুদ্ধতা এবং আল্লাহর প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন।

মাশাআল্লাহ কখন, কোথায় বলবেন

মাশাআল্লাহ বলার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম ও পরিস্থিতি রয়েছে। নিচে কিছু উদাহরণ দেওয়া হলো—

১. ভালো কাজের প্রতি প্রশংসা: যখন আপনি কাউকে ভালো কোনো কাজ করতে দেখবেন, তখন মাশাআল্লাহ বলুন। যেমন, পরিশ্রমীভাবে কিছু অর্জন করা বা ভালো কাজে সফল হওয়া, তখন মাশাআল্লাহ বলুন। এতে সেই ব্যক্তি উৎসাহিত হবে এবং তার কাজের প্রতি আরও দায়িত্বশীল হবে।

২. সাফল্য বা প্রাপ্তি দেখলে: যখন কোনো ব্যক্তির সফলতা বা প্রাপ্তি দেখতে পাবেন, তখন মাশাআল্লাহ বলুন। এটি নিশ্চিত করবে যে আপনি তার প্রতি হিংসা বা বিদ্বেষ নয়, বরং আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত কামনা করছেন।

৩. কারও সৌন্দর্য বা সাফল্য দেখে: আপনি যদি কারও সৌন্দর্য বা সন্তানের প্রতি মুগ্ধ হন, তখন মাশাআল্লাহ বলুন। যেমন, আপনি যদি কারও সুন্দর শিশুকে দেখে মুগ্ধ হন, তখন মাশাআল্লাহ বলার মাধ্যমে আপনি বদনজর থেকে তাকে রক্ষা করতে পারবেন এবং আল্লাহর রহমত কামনা করবেন।

মাশাআল্লাহ কেন বলবেন?

মাশাআল্লাহ বলা শুধুমাত্র একটি সুন্দর অভ্যাস নয়, এর পেছনে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ আল্লাহর ওপর বিশ্বাস এবং শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্তি পাওয়ার আশাবাদ। বদ নজর বা খারাপ দৃষ্টির ক্ষতি থেকে আমাদের এবং আমাদের প্রিয়জনদের রক্ষা করার জন্য এই শব্দটি খুবই কার্যকর। শয়তান আমাদের ভালোর প্রতি হিংসা করতে পারে, তাই যখন আমরা কারও সৌন্দর্য, সাফল্য বা প্রাপ্তি দেখি, তখন মাশাআল্লাহ বলার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর আশ্রয় ও বরকত কামনা করি।

কোরআনে সুরা কাহাফে একটি ঘটনা উল্লেখ রয়েছে, যেখানে দুটি বাগান পাওয়া এক ব্যক্তির অহংকারের কারণে তার সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। সেই ব্যক্তি মাশাআল্লাহ না বলে বলেছিল, ‘আমি মনে করি না এগুলো কখনো ধ্বংস হবে’—যার ফলে আল্লাহর ক্রোধে বাগানগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। (সুরা কাহাফ: ৪৩)

মাশাআল্লাহ একটি শক্তিশালী ইসলামিক পরিভাষা যা শুধুমাত্র একটি বাক্য নয়, বরং এর মাধ্যমে আল্লাহর ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা এবং মানবিক সৌন্দর্য ও সাফল্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়। এ শব্দের সঠিক ব্যবহার আমাদের জীবনকে আরও সুস্থ, সুরক্ষিত এবং পূর্ণতা দানে সহায়তা করে।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button