মাদারগঞ্জ মডেল থানার সেই এসআইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু


জামালপুরের মাদারগঞ্জ মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. জাহিদুল হাসানের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের আনীত অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। আজ রোববার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জামালপুর পুলিশ কন্ট্রোল রুমের পরিদর্শক মো. গোলাম সারোয়ার।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মাদারগঞ্জ উপজেলার চরপাকেরদহ গ্রামের আহসান উল্লাহর ছেলে কাফিউলের ২২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন পার্শ্ববর্তী পূর্ব সুখনগরী গ্রামের মৃত সোলায়মানের ছেলে সানাউল্লাহ। এ নিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি সানাউল্লাহকে আসামি দিয়ে কাফিউলের স্ত্রী মেরিনা বেগম জামালপুর আদালতে মামলা করেন। ওই মামলা জামালপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত শেষে ঘটনার সত্যতা রয়েছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আসামি ছানাউল্লাহ মামলা প্রত্যাহার করতে কাফিউলসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও হুমকি দেন। এ নিয়ে গত ১০ মার্চ সানাউল্লার বিরুদ্ধে আদালতে আরও একটি মামলা করেন মেরিনা বেগম। মামলাটি ইসলামপুর থানা-পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে গত ২৭ মার্চ কাফিউলের বিরুদ্ধে ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের মনগড়া অভিযোগ তোলে আদালতে মামলা করেন আসামি সানাউল্লাহ।
তবে কাফিউলের দাবি, মামলায় উল্লিখিত সময় ও তারিখে ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ডাহা মিথ্যা।
এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহিদুল হাসান মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে সানাউল্লাহর পক্ষে আদালতে মনগড়া প্রতিবেদেন দাখিল করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এ নিয়ে ৯ জুলাই আইনগত প্রতিকার চেয়ে ইসলামপুর পৌর শহরের দক্ষিণ দরিয়াবাদ এলাকায় বসবাসকারী ভুক্তভোগী কাফিউল জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। তবে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন অভিযুক্ত এসআই জাহিদুল হাসান।
উল্লেখ্য, ১৫ জুলাই আজকের পত্রিকার শেষ পৃষ্ঠায় ‘টাকা নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ, এসপির কাছে ভুক্তভোগী’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশ হলে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে কাফিউল বলেন, ‘আজ বিকেলে ইসলামপুর থানা-পুলিশের মাধ্যমে একটি নোটিশ পেয়েছি। ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৩ আগস্ট বেলা ১১টায় অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আমাকে ডাকা হয়েছে। আমি যথাসময়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে এসআই জাহিদের দুর্নীতির সাক্ষ্য দেব।’
অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জামালপুর পুলিশ কন্ট্রোল রুমের পরিদর্শক মো. গোলাম সারোয়ার বলেন, ‘এসআই জাহিদ হাসানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত শুরু করা হয়েছে। অভিযোগকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’