শিরোনাম

মানব পাচারকারীদের মুখোশ উন্মোচন করবে ‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’

মানব পাচারকারীদের মুখোশ উন্মোচন করবে ‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’

একজন গর্ভবতী নারীর দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রাম, সাতটি দেশের অভিবাসন-পথ পেরিয়ে বেঁচে থাকার গল্প- এটি কোনো কাল্পনিক থ্রিলার নয়, বরং বাস্তবতার ওপর নির্মিত এক সিনেম্যাটিক দলিল। বাংলাদেশি নির্মাতা আজিজুল হাসান সূর্য পরিচালিত আসন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র ‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’ এমন এক গল্প নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে, যার প্রতিটি দৃশ্য, সংলাপ এবং আবেগ উঠে এসেছে মানবপাচারের শিকার নারীদের জীবন থেকে।

এই চলচ্চিত্র কেবল একটি আন্তর্জাতিক প্রজেক্ট নয়, বরং এটি একান্তভাবেই বাংলাদেশি দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা একটি বৈশ্বিক গল্প। সূর্য ও তার গবেষণা টিম বাংলাদেশে দীর্ঘ সময় কাটিয়ে মানবপাচার থেকে ফিরে আসা নারীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, শুনেছেন তাদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, সংগ্রাম, পুনরায় বেঁচে ওঠার কাহিনি। এই জীবন্ত অভিজ্ঞতাগুলোকেই ন্যারেটিভ থ্রিলারে রূপ দিয়েছেন নির্মাতা, যার ফল ‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’ একটি সিনেমা, যেটি একইসঙ্গে প্রতিবাদ, কাব্যিকতা ও মানবিক আবেদন হয়ে উঠছে।

ক্রাফট ফিল্মস এলএ প্রযোজিত এই ছবিটি বর্তমানে উন্নয়ন পর্যায়ে রয়েছে এবং ২০২৭ সালে শুটিং শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। নির্মাতা আজিজুল হাসান সূর্য জানিয়েছেন, এই সিনেমা শুধু একটি গল্প বলবে না, বরং একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করবে- যেখানে নতুন প্রজন্মের শিল্পীরা মেন্টরশিপ পাবেন এবং হলিউডের ইউনিয়ন-ভিত্তিক প্রোডাকশনে কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে।

সূর্যের চলচ্চিত্র যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে, ‘দ্য অক্সুলারি ভার্ব’ নামের একটি ডকুমেন্টারি দিয়ে। সেখানে উঠে এসেছিল শিশু শ্রম ও নির্যাতনের নির্মম বাস্তবতা। সে কাজই তাকে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে স্থান করে দেয় এবং পৃথিবীর নানা প্রান্তের স্বাধীন নির্মাতাদের সঙ্গে সংযোগ ঘটায়।

পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং সেখানে গোল্ডেন গ্লোব ফেলোশিপের অধীনে একাধিক আন্তর্জাতিক প্রজেক্টে ডিরেক্টর অব ফটোগ্রাফি (ডিওপি) হিসেবে কাজ করেন। তার ভিজ্যুয়াল দক্ষতা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এই পর্বেই আরও পরিপক্ব হয়, যা ‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’-এর প্রতিটি ফ্রেমে দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা যায়।

‘ফিল্ডস অব ফ্রিডম’ কেবল একটি থ্রিলার ফিল্ম নয়, এটি একটি মানবিক দলিল, এক নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, এবং সমাজের প্রান্তিক কণ্ঠগুলোকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরার একটি চেষ্টা। এটি এমন এক আন্তর্জাতিক গল্প, যার মূল স্পন্দন বহন করছে বাংলাদেশের বাস্তবতা, দুঃখ, প্রতিরোধ আর আশা।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button