শিরোনাম
মিরসরাইয়ে যুবলীগের সাবেক নেতাসহ ২ জনকে গুলিভারতের হরিদ্বারে মনসা দেবীর মন্দিরে পদদলনে ৭ জনের মৃত্যু, আহত ৫৫সেনাবাহিনী ও সেনাপ্রধানকে নিয়ে ফেসবুক পোস্টে যা বললেন সারজিসরাজস্থানে বাংলাভাষী মুসলিম তরুণ আটক, নাগরিকত্বের প্রমাণ থাকার পরও বাংলাদেশে পুশইনগার্দিওলাও হতে চেয়েছিলেন ভারতের কোচ, ফেডারেশন বলছে ভুয়ানিষেধাজ্ঞার পর বৈরী আবহাওয়া, হাতিয়ার লক্ষাধিক জেলে পরিবার দুশ্চিন্তায়বিশ্বব্যাপী এআই সহযোগিতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক সংস্থা গঠনের প্রস্তাব চীনেরনেত্রকোনায় এনসিপির কর্মসূচি প্রতিহতের ঘোষণা, যুবলীগ নেতা আটকইইউতে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বন্ধের কারণ জানাল মেটাভোলায় অস্ত্রসহ ৮ ডাকাত গ্রেপ্তার

শিশুর বিছানায় প্রস্রাব বন্ধে ঘরোয়া সমাধান

শিশুর বিছানায় প্রস্রাব বন্ধে ঘরোয়া সমাধান

এনুরিসেস বা বিছানায় প্রস্রাব করা একটি সাধারণ শিশু সমস্যা। এটি অনেক সময় বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেরে যায়, আবার কখনো কখনো হয়ে দাঁড়ায় দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা। এটি শুধু শারীরিক নয়, বরং মানসিক ও সামাজিক প্রভাবও ফেলে শিশুর জীবনে। এনুরিসেস শিশুদের জন্য লজ্জার বিষয় নয়। একটি চিকিৎসাযোগ্য অবস্থা। প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে ধৈর্য ও নিয়ম মেনে চললে ভালো ফল পাওয়া সম্ভব। অভিভাবকের সহানুভূতি ও সহযোগিতা এর প্রধান চিকিৎসা।

একটি শিশু প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে শেখার বয়সে বিছানায় প্রস্রাব করলে সেটা এনুরিসেস। সাধারণত পাঁচ বছরের পরে এই সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যার চারটি ধরন আছে—

» রাতে ঘুমের মধ্যে প্রস্রাব হওয়া

» দিনের বেলায় প্রস্রাব হয়ে যাওয়া

» জন্ম থেকে দীর্ঘ সময় প্রস্রাব করা

» শিশু ছয় মাস বা তার বেশি সময় প্রস্রাব করেনি, হঠাৎ প্রস্রাব শুরু হওয়া

বিছানায় প্রস্রাবের কারণ

ব্লাডার নিয়ন্ত্রণে বিলম্ব: শিশু মূত্রথলি পূর্ণ হলেও সংকেত মস্তিষ্কে ঠিকভাবে না পৌঁছানো।

জিনগত প্রভাব: বাবা-মা যদি শিশুকালে এনুরিসেসে ভুগে থাকেন, তাহলে সন্তানের মধ্যে এর ঝুঁকি বাড়ে।

এডিএইচ হরমোনের ঘাটতি: অ্যান্টিডিউরেটিক হরমোন বা এডিএইচ রাতের প্রস্রাব কমাতে সাহায্য করে। এর ঘাটতিতে বেশি প্রস্রাব হয়।

গভীর ঘুম: শিশু মূত্রচাপ অনুভব করেও না জাগা।

মনোসামাজিক কারণ: নতুন ভাই বা বোনের জন্ম, বাড়ি বদল, স্কুলে সমস্যা, মানসিক চাপ ইত্যাদি কারণে প্রস্রাব হতে পারে।

মূত্রনালির সংক্রমণ: কোনো কারণে জ্বালা ও চাপ অনুভবের কারণে প্রস্রাব হয়ে যেতে পারে।

লোকজ জ্ঞান থেকে এই বিষয়ে বলা হয়, বাত দোষ যখন প্রাধান্য পায়, তখন প্রস্রাব ধরে রাখা সমস্যা হয়। এটি মূত্রধারণ ও সঠিক সময়ে নির্গমন নিয়ন্ত্রণ করে। দুর্বল হলে অনিয়ন্ত্রিত প্রস্রাব হয়। হজমে সমস্যা হলে তা মূত্রপ্রবাহে প্রভাব ফেলে। শরীরে কফ দোষ বেশি থাকলে শিশুর গভীর ঘুম হয়। সে সময় প্রস্রাব হতে পারে।

পরামর্শ

» রাতে পানি কম খাওয়া।

» ঘুমানোর আগে প্রস্রাব করা।

» প্রশংসার মাধ্যমে শিশুর আত্মবিশ্বাস তৈরি করা।

» বিছানা ভেজা শুরু হলে একটি প্রাকৃতিক অ্যালার্ম বাজে, যা ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রণ শেখায়।

ঘরোয়া চিকিৎসা

অশ্বগন্ধা: এটি স্নায়ুশক্তি বাড়ায়। রাতে খাওয়ার পরে এক কাপ গরম দুধের সঙ্গে আধা চা-চামচ অশ্বগন্ধা মিশিয়ে পান করাতে পারলে উপকার পাওয়া যাবে। সেই সঙ্গে প্রতিদিন বিকেলে পাঁচটি কিশমিশ ও দুটি আমন্ড বাদাম দিয়ে স্মুদি বানিয়ে খাওয়াতে হবে। এতে শিশুর মুড ভালো থাকবে।

দিনের যেকোনো সময় এক চামচ মৌরির গুঁড়া, এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে চেটে চেটে খাওয়াতে হবে।

অশ্বগন্ধা গুড়া। ছবি: সংগৃহীত
অশ্বগন্ধা গুড়া। ছবি: সংগৃহীত

কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে

» সাত বছর পেরিয়েও সমস্যা থাকলে।

» দিনে প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারলে।

» প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা দুর্গন্ধ হলে।

» আচরণগত পরিবর্তন সত্ত্বেও উন্নতি না হলে।

» জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাসে পরামর্শ

» রাতে শোয়ার অন্তত এক ঘণ্টা আগে পানি পান বন্ধ করুন।

» ঘুমানোর আগে শিশুকে প্রস্রাব করাতে হবে।

» রাতে গা গরম রাখতে পায়জামা বা মোজা পরিয়ে দিন।

» ধীরে ধীরে শিশুর প্রস্রাব ধরে রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়তা করুন।

» মানসিকভাবে শিশুকে সাহস জোগান। প্রস্রাব করায় শিশু যেন অপরাধবোধে না ভোগে।

এই সমস্যা খুব সাধারণ এবং বেশির ভাগ শিশুর ক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সঙ্গে সেরে যায়। তবে এটি সাত বছরের পরেও যদি স্থায়ী হয়, তাহলে ঘরোয়া নিয়ম মেনে দেখতে পারেন। তাতে সুস্থ না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

পরামর্শ দিয়েছেন: খাদ্যপথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রধান নির্বাহী, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্র



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button