শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবি
শিক্ষকদের মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠার আহ্বান


স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে ব্যর্থ হয়েছে বিভিন্ন সরকার। শিক্ষাক্ষেত্রে যথাযথ সংস্কার এনে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হলে শিক্ষকদের মানবেতর জীবনযাপন থেকে মুক্তি মিলবে এবং তারা আত্মসম্মান ফিরে পাবেন। তাই পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে জাতীয়করণের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির পঞ্চম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এই দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ঐক্য পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র মুহাম্মদ আবদুর রহীম চৌধুরী। সভায় বক্তব্য রাখেন মুসলিম লীগের সভাপতি জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আকমল হোসেন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বিআইআইটির মহাপরিচালক ড. এম আবদুল আজিজ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ড. আবদুল্লাহ আল ইউসুফ, নেজামে ইসলাম পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা ওবায়দুল হক, হিন্দু মহাজোটের যুগ্ম মহাসচিব নরেন্দ্রনাথ মজুমদার, জাতীয় কবিতা মঞ্চের সভাপতি কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী এবং আরও অনেকে।
বক্তারা বলেন, শিক্ষা খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ না বাড়ালে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। বর্তমানে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উন্নত বিশ্বের মতো মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। শিক্ষার আধুনিকায়ন, শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষাপদ্ধতি সংস্কারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি, যার ফলে দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, শিক্ষা জাতীয়করণ হলে পারিবারিক ব্যয় কমবে এবং সব শ্রেণির মানুষ উপকৃত হবে। একইসঙ্গে শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পেলে তারা আরও মনোযোগী হয়ে পাঠদান করবেন, ফলে প্রাইভেট টিউশনির প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। শিক্ষার্থীদের জন্য শ্রেণিকক্ষ হবে সর্বোত্তম শিক্ষার কেন্দ্র।
বক্তারা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান বিভেদ, কর্মীদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা বলেন, যদি নেতৃত্ব সৎ ও দেশপ্রেমিক হয়, তাহলে জাতিও সঠিক পথে পরিচালিত হবে। অন্যদিকে দুর্নীতিপরায়ণ নেতৃত্ব দেশকে পিছিয়ে দেবে। সততা ও দেশপ্রেমের সাথে পরিচালিত হলে বাংলাদেশও জাপান, নরওয়ে, সুইডেন কিংবা ডেনমার্কের মতো উন্নত দেশে পরিণত হতে পারে।
জাতীয় ঐক্য গঠনের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, দেশকে প্রকৃত উন্নয়নের পথে নিতে এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন, যারা জাতিকে সত্যিকার অর্থে এগিয়ে নিতে সক্ষম। বর্তমানের তথাকথিত উন্নয়ন প্রক্রিয়া শুধু পরনির্ভরশীলতা বাড়াচ্ছে এবং ঋণের বোঝায় দেশকে জর্জরিত করছে। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে সঠিক নেতৃত্ব ও কার্যকর সংস্কার প্রয়োজন।