শিরোনাম

পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যু: এসআই জাহিদের যাবজ্জীবন বহাল

পুলিশের নির্যাতনে মৃত্যু: এসআই জাহিদের যাবজ্জীবন বহাল

থানায় গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় পল্লবী থানার সাবেক এসআই জাহিদুর রহমান খানের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন দণ্ডিত এএসআই রাশেদুল ইসলামের সাজা কমিয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের সোর্স রাসেলকে খালাস দিয়েছেন আদালত। আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করে আজ সোমবার বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের বেঞ্চ এ রায় দেন।

আসামি এএসআই কামরুজ্জামান আপিল না করায় তাঁর বিষয়ে কোনো আদেশ দেননি হাইকোর্ট। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, কামরুজ্জামানের যাবজ্জীবন সাজা বহাল রয়েছে। এএসআই কামরুজ্জামান শুরু থেকে পলাতক রয়েছেন। সোর্স সুমন কারাভোগ করে বেরিয়ে গেছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার বলেন, ‘এসআই জাহিদের যাবজ্জীবন দণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এএসআই রাশেদুল হাসানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পরিবর্তে ১০ বছর দণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছেন। আর রাসেলকে সাত বছরের দণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আদালত।’

এই মামলায় ২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর রায় দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। রায়ে পল্লবী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাশেদুল হাসান ও এএসআই কামরুজ্জামানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন আদালত। এ ছাড়া পুলিশের সোর্স সুমন ও রাসেলের সাত বছর কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে হাইকোর্টে পৃথক আপিল করেন তিন আসামি জাহিদুর রহমান, রাশেদুল হাসান ও রাসেল। ২০২১ সালে হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন। দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে তিন আসামির আপিলের ওপর একসঙ্গে গত ৯ জুলাই শুনানি শুরু হয়। গত ৭ আগস্ট শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য ১০ আগস্ট তারিখ নির্ধারণ করেন। রোববার আংশিক রায় দেন। আজ বাকি রায় দেওয়া হয়।

আদালতে আসামিপক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান এবং মো. আবদুর রাজ্জাক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার। বাদীপক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম।

২০১৩ সালে নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন প্রণয়নের পর ইশতিয়াক হোসেনকে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট মামলাটি করা হয়। ওই আইনে করা এটিই ছিল প্রথম কোনো মামলা।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মিরপুর ১১ নম্বরে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করায় পুলিশের সোর্স (তথ্যদাতা) সুমনকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেছিলেন জনি ও তাঁর ছোট ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। এতে ক্ষিপ্ত সুমন ফোন করলে পুলিশ এসে জনি, রকিসহ আটজনকে ধরে পল্লবী থানায় নিয়ে যায়। থানায় নির্যাতনের একপর্যায়ে জনিকে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রকি ওই বছরের ৭ আগস্ট নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে আদালতে মামলা করেন।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button