গুলশানে চাঁদাবাজির মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতা জানে আলম অপু রিমান্ডে


রাজধানীর গুলশান থানায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় করা মামলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরবকে চার দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নাজমিন আক্তার এই নির্দেশ দেন।
গত ১৭ জুলাই গুলশানে শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদা আদায় করতে গেলে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবদুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাব এবং এক অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর।
পরে শৃঙ্খলা-পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে নিজ নিজ সংগঠন থেকে রিয়াদ, ইব্রাহিম, সাকাদাউন ও সাদমানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সারা দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
এরপর গতকাল শুক্রবার সকালে রাজধানীর গোপীবাগ থেকে অপুকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) একটি দল। তাঁকেও চাঁদাবাজির ঘটনার পর গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোহাম্মদপুরের নবীনগর হাউজিং এলাকার একটি বাসা থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করে ডিবি।
তাদের দাবি, চাঁদাবাজির টাকা ভাগ করে নেওয়ার পর অপু ওই মোটরসাইকেলটি কেনেন। ইয়ামাহা ব্র্যান্ডের এফজেড-এক্স মডেলের মোটরসাইকেলটির বাজারমূল্য তিন লাখ টাকার বেশি।
গুলশান থানায় চাঁদাবাজির মামলায় আজ দুপুরের পর অপুকে আদালতে হাজির করে গুলশান থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। অপুর পক্ষে আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিলের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত চার দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড আবেদনে মোখলেসুর রহমান বলেন, জানে আলম অপুর নেতৃত্বেই শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজি হয়। ঘটনার সময় পাঁচজন গ্রেপ্তার হলেও অপু সেখান থেকে পালিয়ে যান। তাঁর নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ দল দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে গুলশানের বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন। অপু ও তাঁর সহযোগীরা এতটাই প্রভাবশালী যে তাঁদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পাচ্ছিলেন না। আসামি অপুকে রিমান্ডে নিয়ে তাঁর সঙ্গে আর কারা কারা আছে, তা জানতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
এর আগে গত ২৭ জুলাই মামলার আসামি রিয়াদ, ইব্রাহিম, সাকাদাউন ও সাদমানকে সাত দিন করে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত।