আগামী নির্বাচনে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী বাধ্যতামূলক চায় বিএনপি


জাতীয় সংসদে বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসন রাখার পক্ষে মত দিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনে সংসদে মোট আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে এই হার বাড়ানোর পক্ষে বিএনপি।
আজ রোববার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৯ তম দিনের সংলাপের বিরতিতে দলের প্রস্তাবের কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ।
সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, নারীদের জন্য সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল রাখার পক্ষে আমরা। এর পাশাপাশি আসন্ন নির্বাচনে মোট ৩০০ আসন ধরে ৫ শতাংশ আসনে অর্থাৎ ১৫টি আসনে রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই নারী প্রার্থীকে মনোনয়ন দেবে। সংশোধিত সংবিধানের ভিত্তিতে পরবর্তীতে যখন নির্বাচন হবে তখন, ৩০০ আসনের ভিত্তিতে ১০ শতাংশ আসনে অর্থাৎ ৩০টি আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়ার কথা বলেছি। আমাদের প্রস্তাব, প্রত্যেক দল যেন সেই বিধান রাখে।
বিদ্যমান সংরক্ষিত ৫০টি আসন বহাল থাকলে সরাসরি ভোটে নির্বাচিত ৩০ টিসহ সংসদে মোট নারী প্রতিনিধির সংখ্যা ৮০ টিতে উন্নীত হবে জানিয়ে সালাহউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এইভাবে যদি সমাজের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়, নারী সমাজের অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায় এবং জাতীয় ভিত্তিতে যদি জনমত আসে, তখনকার বিবেচনায় পরবর্তী পার্লামেন্ট হয়তো এই ডাইরেক্ট নির্বাচন বিধানটা আরও সম্প্রসারিত করতে পারে—এই প্রস্তাব আমরা রেখেছি।’
এই বিএনপি নেতা আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রে সাংবিধানিকভাবে সংসদীয়ভাবে বা যেকোনোভাবে স্বৈরতন্ত্রের উদ্ভব যাতে না হয়, ফ্যাসিবাদের উত্থান যাতে না হয়, সেটা বন্ধ করার জন্য এক ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী পদে সর্বোচ্চ ১০ বছরের বেশি বহাল থাকবেন না, বা ওই পদ আরোহণ করতে পারবেন না। এটি বিবেচিত হিসেবে একমত হয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের গঠনটা সংবিধানে যুক্ত করার বিষয়ে একমত হয়েছি। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার যদি চলে আসে, স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় এবং প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ যদি সর্বোচ্চ ১০ বছরে নির্ধারিত হয়, তাহলে আমরা কোনোভাবেই আর মনে করি না, রাষ্ট্রে স্বৈরতান্ত্রিক, ব্যক্তিতান্ত্রিক, স্বৈরতন্ত্র বা ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।’
সালাহউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘পুলিশ কমিশন গঠনের বিষয়ে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে, যাতে রাষ্ট্রে পুলিশ বিভাগের কর্মকাণ্ড একটা জবাবদিহির আওতায় আসে এবং জনগণের সেবা যাতে নিশ্চিত করা হয়। পুলিশ যাতে জনবান্ধব হয়, প্রকৃত অর্থে পুলিশ যেন জনগণের বন্ধু হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সেটার প্রয়োজন আছে।’
সালাহউদ্দীন আহমদ বলেন, ‘রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ক্ষেত্রে কমিশনের প্রস্তাবে আমরা একমত হয়েছি। রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত বিষয়গুলো—সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক, ন্যায়বিচার—এর সঙ্গে গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা, ও সম্প্রীতি—এই বিষয়গুলো যুক্ত করার কথা বলেছি। আমরা পঞ্চম সংশোধনীতে গৃহীত সমস্ত মূলনীতির সঙ্গে একমত। সেখানে মহান আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস আছে। সেখানে গণতন্ত্র আছে, জাতীয়তাবাদ আছে। মহান আল্লাহর ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস—এই কথাগুলো পঞ্চম সংশোধনের পরবর্তীতে গৃহীত হয়েছে।’