ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম


ইরানের ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলায় যুক্তরাষ্ট্র শক্তিশালী বাংকার বাস্টার বোমা ব্যবহার করেনি। এর একটি সম্ভাব্য কারণ অবশেষে জানা গেল। মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ জেনারেলের মতে, স্থাপনাটি এতই গভীরে অবস্থিত যে সেখানে এই ধরনের বোমা কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা কম।
গত বৃহস্পতিবার সিনেটরদের সঙ্গে এক গোপন ব্রিফিংয়ে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন এই মন্তব্য করেন। তাঁর এই মন্তব্য সম্পর্কে তিনজন প্রত্যক্ষ শ্রোতা এবং একজন পরোক্ষ শ্রোতা সিএনএনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র কেন ইরানের ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনায় ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর (এমওপি) বোমা ব্যবহার করেনি, অবশেষে তার একটি প্রথম সম্ভাব্য ব্যাখ্যা জানা গেল। মার্কিন কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, ইস্পাহানের ভূগর্ভস্থ কাঠামোতে ইরানের ৬০ শতাংশেরও বেশি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুত রয়েছে। সে হিসাবে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির উপযুক্ত ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের পথে ইরান অনেকখানি এগিয়ে গেছে ধারণা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
মার্কিন বি-২ বোমারু বিমানগুলো ইরানের ফোরদো এবং নাতানজ পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে ডজনখানেক বাংকার বাস্টার বোমা নিক্ষেপ করেছিল। কিন্তু ইস্পাহানে শুধু একটি মার্কিন সাবমেরিন থেকে টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়।
জেনারেল কেইন, প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং সিআইএ পরিচালক জন র্যাটক্লিফ আইনপ্রণেতাদের কাছে এই গোপন ব্রিফিং দেন। জেনারেল কেইনের একজন মুখপাত্র এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, কংগ্রেসের কাছে চেয়ারম্যানের গোপন ব্রিফিং নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে পারেন না।
একজন মার্কিন কর্মকর্তা সিএনএনকে জানান, ব্রিফিং চলাকালে সিআইএ পরিচালক র্যাটক্লিফ আইনপ্রণেতাদের জানান, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ধারণা অনুযায়ী ইরানের বেশির ভাগ ইউরেনিয়াম ইস্পাহান এবং ফোরদোতেই মজুত রয়েছে।
ব্রিফিং শেষে ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস মারফি সিএনএনকে বলেন, ইরানের কিছু পারমাণবিক স্থাপনা ‘ভূগর্ভের এতটাই গভীরে রয়েছে যে আমরা কখনোই সেগুলোতে পৌঁছাতে পারব না। তাই তারা তাদের মজুতের বেশির ভাগ অংশ এমন সব জায়গায় সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে, যেখানে আমেরিকার বোমা হামলা কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’
তবে বাংকার বাস্টার বোমায় ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে বলে বারবার দাবি করছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।