সিট বাণিজ্যের অভিযোগ, লঞ্চের মধ্যে বিএনপি নেতাকে যাত্রীদের কিল-ঘুষি, লাথি


বরিশালের হিজলা উপজেলায় ঢাকা রুটের একটি লঞ্চে যাত্রীদের সঙ্গে খালেক মাঝি নামের স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও তাঁর দলবলের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার শৌলা লঞ্চঘাটে এ ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের অভিযোগ, খালেক মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা লঞ্চে চাদর বিছিয়ে সিট বাণিজ্য করছিলেন। যাত্রীদের কাছে সিটের জন্য ১ হাজার টাকা দাবি করেছেন তাঁরা। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন খালেক মাঝি।
খালেক মাঝি হরিণাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক।
লঞ্চের একাধিক যাত্রী জানান, এমভি জানডা নামের লঞ্চটি আজ সকাল ৮টায় যাত্রী নিয়ে মুলাদীর মৃধারহাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। সকাল ৯টায় হিজলার হরিনাথপুরের শৌলা লঞ্চঘাটে এটি ভিড়ে। এ ঘাট থেকে ওঠা যাত্রীরা লঞ্চের ডেকে বসতে যান। কিন্তু ডেকে আগে থেকে একাধিক চাদর বিছিয়ে রাখেন খালেক মাঝি ও তাঁর লোকেরা। প্রতি চাদর সরিয়ে সিট দেওয়ার বদলে যাত্রীদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। এ নিয়ে বাগ্বিতাণ্ডার একপর্যায়ে যাত্রীদের ওপর হামলা করা হয়। তখন উত্তেজিত যাত্রীরা সংঘবদ্ধ হয়ে খালেক মাঝি ও তাঁর লোকজনকে পাল্টা কিল–ঘুষি ও লাথি দেন। একপর্যায়ে জনরোষের মুখে খালেক মাঝি দ্রুত সটকে পরেন। মেহেদী হাসান নামের লঞ্চের এক যাত্রী অভিযোগ করেন, খালেক মাঝি ও তাঁর সহযোগীরা লঞ্চের ডেকে আগে চাদর বিছিয়ে সিট বাণিজ্য করে আসছিলেন। তাঁদের দাবি করা টাকা না দিলে যাত্রীদের মারধর করা হয়। এতে কমপক্ষে ১০ জন নারী ও পুরুষ যাত্রী আহত হন। যাত্রীরা খেপে গিয়ে বিএনপি নেতা ও তাঁর সহযোগীদের ওপর পাল্টা আঘাত করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক লঞ্চ কর্মচারী জানিয়েছেন, শৌলা লঞ্চঘাটে খালেক মাঝিকে চাঁদা না দিলে সাধারণ যাত্রীরা ডেকে বসতে পারেন না। তাঁরা (লঞ্চ কর্মচারী) খালেক মাঝির কাছে অনেকটা জিম্মি।
তবে চাদর বিছিয়ে সিট বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করে খালেক মাঝি বলেন, ‘লঞ্চের মধ্যে গোলযোগ দেখে আমি তা থামাতে গিয়েছিলাম। এ সময় লঞ্চের যাত্রীরা আমার ওপর হামলা করেছে।’
এ ব্যাপারে হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি লঞ্চে হামলার ঘটনা শুনে খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু প্রত্যন্ত এলাকা হওয়ায় কেউ কিছু বলতে পারছেন না। তা ছাড়া ওই ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাঁরা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেবেন।