গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের লাগবেই: ট্রাম্প


ক্রাইম জোন ২৪।। বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডকে যুক্তরাষ্ট্রের সীমানাভুক্ত করার সংকল্প পুনরায় ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার স্বার্থেই গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের হাতে থাকা উচিত।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশনের (ন্যাটো) মহাসচিব মার্ক রুটের সঙ্গে বৈঠকের সময় এই প্রসঙ্গ তোলেন ট্রাম্প।
ন্যাটো মহাসচিবকে ট্রাম্প বলেন, “আপনি জানেন, মার্ক, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য গ্রিনল্যান্ডের দখল আমাদের প্রয়োজন। এটা শুধু নিরাপত্তা নয়— বৈশ্বিক নিরাপত্তার প্রশ্ন। আমাদের অনেক ‘প্রিয় খেলোয়াড়’ এই দ্বীপের উপকূলের চারপাশে ঘোরাঘুরি করছে।”
এখানে ‘প্রিয় খেলোয়াড়’ বলতে তিনি রাশিয়া ও চীনকে বোঝান। এর আগেও তিনি একাধিকবার বলেছেন, গ্রিনল্যান্ডের আশপাশের সমুদ্রে চীন ও রাশিয়ার উপস্থিতি বাড়ছে এবং এটি যে কোনো সময় যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
বৈঠকে ন্যাটো মহাসচিব ট্রাম্পের বক্তব্যের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। তবে গ্রিনল্যান্ডের সদ্য নির্বাচিত সরকার প্রধান জেনস-ফ্রেডেরিক নিলসেন ট্রাম্পের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটি প্রমাণ করে যে নিকট ভবিষ্যতে আমাদের স্বার্থ রক্ষায় একজোট হওয়া জরুরি।”
গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউটে এগেড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা বাড়ানোর কথা বলছেন। যথেষ্ট হয়েছে! এখন তার থামা উচিত।”
বিশ্বের বৃহত্তম দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডের আয়তন ২১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৬ বর্গকিলোমিটার, জনসংখ্যা মাত্র ৫৬ হাজার ৫৮৩ জন। দ্বীপটির প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ইনুইট জাতিগোষ্ঠীর। যদিও গ্রিনল্যান্ড উত্তর আমেরিকার অংশ, এটি ডেনমার্কের অধীনে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ। দ্বীপটির বাসিন্দারা ডেনমার্ক এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নাগরিকত্ব ভোগ করেন।
এই দ্বীপটি আর্কটিক ও আটলান্টিক মহাসাগরের মাঝখানে অবস্থিত, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, দ্বীপটির গভীরে রয়েছে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল ও খনিজ সম্পদ।
গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার আকাঙ্ক্ষা ট্রাম্পের নতুন নয়। ২০১৯ সালে প্রথম মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি বলেছিলেন, কৌশলগত কারণে যুক্তরাষ্ট্রের গ্রিনল্যান্ড কেনা উচিত। গত বছরও (২৫ নভেম্বর) তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছিলেন, “বিশ্বের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতার স্বার্থে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত এখনই গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা গ্রহণ করা।”
সেই সময়ও ট্রাম্পের এই মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছিলেন, “গ্রিনল্যান্ড আমাদের। এটি বিক্রির জন্য নয় এবং কখনও হবে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছি এবং তা বৃথা যেতে দেব না।”
ক্রাইম জোন ২৪ সর্বদা নির্ভরযোগ্য সংবাদ পরিবেশনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আরও আপডেট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন।