শিরোনাম
সিঙ্গাপুরের ৪৯তম ধনী বাংলাদেশের আজিজ খানএকীভূত হতে রাজি গ্লোবাল ইসলামী, বাকি থাকল এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামি ব্যাংকউপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পেল টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক অ্যান্ড লাইসেন্সিং পলিসির খসড়ানির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রের নেপথ্যে আওয়ামী লীগ: শামসুজ্জামান দুদুনেইমারকে পাল্টা জবাব দিলেন আনচেলত্তিসি চিনপিংকে অমরত্বের সম্ভাবনার কথা বললেন পুতিন, জাতীয় টিভিতে ফাঁস হলো অডিওবিদেশে বাজেয়াপ্ত অর্থ বাংলাদেশে ফেরত আনতেই হবে: ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারপারসন ভ্যালেরিয়াঁকালকিনিতে প্রবাসীর স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যাসাতক্ষীরায় চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাসুদ রানা ওরফে কোপা মাসুদ দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তারদিনের ভোট দিনেই হবে, রাতে নয়: জয়নুল আবদিন ফারুক

শেয়ারের দাম বাড়ল ২০%, সিডনি সুইনির প্রচারণাকে ‘এ পর্যন্ত সেরা’ বলল আমেরিকান ঈগল

শেয়ারের দাম বাড়ল ২০%, সিডনি সুইনির প্রচারণাকে ‘এ পর্যন্ত সেরা’ বলল আমেরিকান ঈগল

‘ইউফোরিয়া’ খ্যাত অভিনেত্রী সিডনি সুইনিকে দিয়ে বিজ্ঞাপনের কারণে বেশ বিতর্কের মুখোমুখি হয়েছিল আমেরিকান ঈগল। জনপ্রিয় মার্কিন পোশাক ও আনুষঙ্গিক পণ্য বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান আমেরিকান ঈগল আউটফিটার্স, যা সাধারণত আমেরিকান ঈগল নামে পরিচিত। বিতর্ক-সমালোচনা-প্রতিক্রিয়া সামলে নিয়ে এবার প্রতিষ্ঠানটি জানালো, সিডনি সুইনির সঙ্গে অংশীদারত্ব এখন পর্যন্ত কোম্পানির ‘সেরা’ বিজ্ঞাপন প্রচারণা।

বুধবার মার্কিন শেয়ারবাজারের অতিরিক্ত সময়ের লেনদেনে আমেরিকান ঈগলের শেয়ারদর ২০ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়। এদিন আমেরিকান ঈগল সিডনি সুইনির বিজ্ঞাপনের প্রশংসা করে এবং জানায়, তাদের ২০২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের আয় প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়েছে।

সিডনি সুইনির প্রচারণার পাশাপাশি সম্প্রতি টেইলর সুইফটের নতুন বাগদত্তা ট্র্যাভিস কেলসের সঙ্গে অংশীদারত্ব আমেরিকান ঈগলকে নতুন গ্রাহক অর্জন এবং বিভিন্ন চ্যানেলে ইতিবাচক প্রবাহ আনতে সাহায্য করেছে।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিইও জে শটেনস্টেইন বলেন, ‘শরৎ মৌসুম ইতিবাচকভাবে শুরু হয়েছে। শক্তিশালী পণ্যের সরবরাহ এবং সিডনি সুইনি ও ট্র্যাভিস কেলসের সঙ্গে সাম্প্রতিক মার্কেটিং প্রচারণার সফলতায় আমরা গ্রাহকদের সচেতনতা, সম্পৃক্ততা এবং তুলনামূলক বিক্রয়ে উন্নতি লক্ষ্য করেছি। আমরা আমাদের অগ্রগতির ওপর ভিত্তি করে আরও এগিয়ে যেতে এবং আমাদের প্রতীকী ব্র্যান্ডগুলোর ধারাবাহিক শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বেশি মুনাফা, দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি ও শেয়ারহোল্ডারদের জন্য মূল্য সৃষ্টি করার প্রত্যাশা করছি।’

কোম্পানিটি এ বছরের শুরুর দিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া তাদের বার্ষিক আর্থিক পূর্বাভাস পুনরায় দিয়েছে। বর্তমানে তারা আশা করছে, তাদের তুলনামূলক বিক্রি প্রায় স্থিতিশীল থাকবে, যা বাজার বিশ্লেষকদের ০.২ শতাংশ পতনের পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো।

যদিও কোম্পানিটি এখনো মনে করছে যে পুরো বছরের জন্য গ্রস মার্জিন কম থাকবে, তবুও তারা পরিচালন আয়ের দৃষ্টিভঙ্গিতে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে। শুল্কের প্রভাবকে বিবেচনায় নিয়ে আমেরিকান ঈগল এখন তাদের পুরো বছরের পরিচালন আয় ২৫৫ মিলিয়ন থেকে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে হবে বলে ধারণা করছে, যা তাদের পূর্ববর্তী ৩৬০ মিলিয়ন থেকে ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের পূর্বাভাসের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

এদিকে আমেরিকান ঈগলের ত্রৈমাসিক পারফরম্যান্স ওয়াল স্ট্রিটের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে। এলএসইজির পরিচালিত বিশ্লেষকদের জরিপ অনুযায়ী, কোম্পানিটি প্রত্যাশার চেয়ে ভালো ফল দেখিয়েছে।

প্রতি শেয়ারের আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৫ সেন্ট, যা প্রত্যাশিত ২১ সেন্টের চেয়ে অনেক বেশি। একই সময়ে, তাদের মোট রাজস্ব ছিল ১.২৮ বিলিয়ন ডলার, যা ১.২৪ বিলিয়ন ডলারের প্রত্যাশাকে ছাড়িয়ে গেছে।

গত ২ আগস্টে শেষ হওয়া তিন মাসে আমেরিকান ঈগলের নিট আয় ছিল ৭৭.৬ মিলিয়ন ডলার বা শেয়ারপ্রতি ৪৫ সেন্ট। এটি গত বছরের একই সময়ের নিট আয়, ৭৭. ৩ মিলিয়ন ডলার বা শেয়ারপ্রতি ৩৯ সেন্টের তুলনায় সামান্য বেশি। যদিও কোম্পানির বিক্রি কিছুটা কমেছে। গত বছরের ১.২৯ বিলিয়ন ডলার থেকে তা কমে এবার ১.২৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে সামগ্রিক ফলাফল ইতিবাচক বলে মনে করছে প্রতিষ্ঠানটি।

আমেরিকান ঈগল বর্তমান প্রান্তিকে তুলনামূলক বিক্রি ‘লো সিঙ্গেল ডিজিট’ পরিসরে বাড়ার আশা করছে, যা বিশ্লেষকদের ০.৯% বৃদ্ধির পূর্বাভাসের চেয়ে ভালো। কোম্পানিটি প্রত্যাশা করছে, এই ইতিবাচক প্রবণতা চতুর্থ প্রান্তিকে পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।

তবে, চলতি বছরে আমেরিকান ঈগলের পারফরম্যান্স বেশ কিছু কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—পণ্যের সরবরাহে ভুল সিদ্ধান্ত, বর্ধিত শুল্ক এবং ভোক্তাদের মধ্যে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা। বিশেষ করে, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ভোক্তারা পোশাক ও জুতার মতো পণ্য কেনার ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক ও বাছবিচারী হয়ে উঠেছে।

এ পরিস্থিতিতে আমেরিকান ঈগল ‘ব্যাক-টু-স্কুল’ শপিং সিজন শুরুর আগেই সিডনি সুইনিকে নিয়ে তাদের প্রচারণা শুরু করে। তবে এই উদ্যোগ কিছু ক্ষেত্রে উল্টো ফল দেয়। কিছু গ্রাহকের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দেয়।

এই প্রচারণায় কোম্পানিটির স্লোগান ছিল, ‘Sydney Sweeney has great jeans. ’। এ স্লোগানের সমালোচনা করেন কিছু অতিবামপন্থী সমালোচক। তাঁরা এটিকে দ্বৈতার্থক এবং ইউজেনিক্সের (eugenics) প্রতি ইঙ্গিতবাহী বলে অভিযোগ করে। অন্যদিকে, ডানপন্থীরা এই প্রচারণাকে স্বাগত জানায়। এমনকি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এ বিষয়ে মন্তব্য করে এটিকে ‘সবচেয়ে হট’ বিজ্ঞাপন বলে অভিহিত করেন।

তবে বিজ্ঞাপনগুলো অতিরিক্ত যৌন ইঙ্গিতপূর্ণ এবং বাস্তবতার সঙ্গে বেমানান বলে অনেকে সমালোচনা করেন। প্রশ্ন ওঠে, আমেরিকান ঈগল আসলে কোন ধরনের গ্রাহককে লক্ষ্য করে এই প্রচারণা চালাচ্ছে?

গত ২৩শে জুলাই আমেরিকান ঈগল এই প্রচারণা শুরু করে। বিজ্ঞাপনটি সমালোচনার মুখে পড়লেও কোম্পানিটি একে সফল বলে দাবি করেছে। তাদের ভাষ্যমতে, সুইনির প্রচারণা এবং কেলসের সঙ্গে অংশীদারত্ব তাদের ব্যবসায় ‘উল্লেখযোগ্য উন্নতি’ এনেছে। চলতি প্রান্তিকে তুলনামূলক বিক্রি বেড়েছে। কোম্পানিটি আরও দাবি করে, তারা ৭ লাখ নতুন গ্রাহক অর্জন করেছে এবং আগস্ট মাস জুড়ে তাদের সব বিক্রয় মাধ্যমে ক্রেতার আনাগোনা বেড়েছে।

আমেরিকান ঈগলের মতে, সুইনি প্রচারণার কারণে ডেনিম পণ্যের বিক্রি অনেক বেড়েছে। দোকানে ক্রেতাও বেড়েছে। ব্র্যান্ড সম্পর্কে ক্রেতাদের সচেতনতা ও আগ্রহ বেড়েছে। সিডনি জ্যাকেট মাত্র এক দিনেই বিক্রি হয়ে যায়। একইভাবে, বিশেষ ডিজাইন করা সিডনি জিন্সগুলোও এক দিনে শেষ হয়ে যায়। সিডনি জিন্সের বিক্রয়লব্ধ পুরো অর্থ মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানকারী ‘ক্রাইসিস টেক্সট লাইন’ দান করা হয়।

এদিকে, আমেরিকান ঈগল তাদের প্রচারণায় নতুন গতি এনেছে। ক্যানসাস সিটি চিফসের খেলোয়াড় ট্র্যাভিস কেলসেকে নিয়ে চালু করা একটি বিশেষ প্রচারণা, যা পপ তারকা টেইলর সুইফটের সঙ্গে কেলসের বাগদানের ঘোষণার পরদিন শুরু হয়েছিল, তাতে এক দিনেই তাদের অতীতের এক সপ্তাহের বিক্রির তিনগুণ বিক্রি হয়েছে। কেলসে এবং তার সতীর্থদের পরা অনেক পোশাকই দ্রুত বিক্রি হয়ে গেছে।

কেলসে এবং তাঁর মতো তারকাদের সঙ্গে আমেরিকান ঈগলের অংশীদারত্ব থেকে বোঝা যায় যে, বাজারে যখন খরচ কিছুটা মন্দা চলছে, তখন গ্রাহকদের কাছে প্রাসঙ্গিক থাকতে এবং প্রতিযোগীদের ভিড়ে নিজেদের আলাদা করে তুলে ধরতে কোম্পানিটি এমন কৌশল অবলম্বন করছে।

তবে, আমেরিকান ঈগলকে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হচ্ছে। অ্যাবারক্রোম্বি অ্যান্ড ফিচ, গ্যাপ ও লিভাইসের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরাও একই ধরনের প্রচারণায় জোর দিয়েছে। গ্যাপ সম্প্রতি তাদের ‘বেটার ইন ডেনিম’ প্রচারে ক্যাটসআই এবং কেলিসের জনপ্রিয় গান ‘মিল্কশেক’ ব্যবহার করেছে। লিভাইস তাদের প্রচারে বিয়ন্সে-কে যুক্ত করেছে, আর অ্যাবারক্রোম্বি ক্রীড়া জগতের দিকে ঝুঁকে এনএফএলের সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে।

পাশাপাশি, অনিশ্চিত শুল্ক পরিস্থিতি আমেরিকান ঈগলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কোম্পানিটি এ বছর চীনের ওপর তাদের নির্ভরতা ১০ শতাংশের নিচে নামানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু ভিয়েতনাম এবং ভারতের মতো দেশে তাদের বড় উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে, যেগুলো পারস্পরিক শুল্ক নীতির আওতায় রয়েছে।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button