ইউরোপীয় কমিশনের বিমান জ্যামিং করছে রাশিয়া,মস্কো বলছে ‘ভুয়া’খবর


ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েনকে বহনকারী উড়োজাহাজের জিপিএস জ্যামিংয়ে রাশিয়ার কোনো হাত নেই। আজ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এমন দাবি করেছে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, রাশিয়া ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েনের উড়োজাহাজের জিপিএস জ্যাম করেছে বলে ইইউ যে অভিযোগ করছে তা পুরোপুরি মিথ্যা। এবং এ ধরনের কাজের জন্য রাশিয়াকে অভিযুক্ত করা সন্দেহবাতিক আচরণ ছাড়া আর কিছু নয়।
গত রোববার, বুলগেরিয়া যাচ্ছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট। ওই যাত্রায়ই মাঝ আকাশে উরসুলাকে বহনকারী উড়োজাহাজের জিপিএস জ্যাম করে দেওয়া হয়। আর বরাবরের মতোই অভিযোগের তীর ওঠে রাশিয়ার দিকে। এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় কমিশন জানায়, রাশিয়ার হস্তক্ষেপে উরসুলা ভন ডার লিয়েনকে বহনকারী উড়োজাহাজের নেভিগেশন সিস্টেমে সমস্যা দেখা দিয়েছিল। বুলগেরীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে নেভিগেশন সিস্টেমে এই সমস্যার জন্য তারা রাশিয়াকে সন্দেহ করছে। বুলগেরিয়া সরকার আরও নিশ্চিত করেছে, উড়োজাহাজের উড়ালকালে সেটির জিপিএস ন্যাভিগেশন সিস্টেমে তথ্য প্রেরণকারী স্যাটেলাইট সংকেত নিষ্ক্রিয় করা হয়েছিল।
অবশ্য, শেষ পর্যন্ত উরসুলাকে নিয়ে বুলগেরিয়ার দক্ষিণ প্রান্তের প্লোভডিভ বিমানবন্দরে নিরাপদেই অবতরণ করে বিমানটি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই অভিযোগ তোলার আগেই সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমস নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানায়, উরসুলার বিমানের জিপিএস জ্যাম করা হয়েছে। এর ফলে ‘কাগুজে ম্যাপ’ ব্যবহার করে অবতরণ করতে হয়েছে বিমানটিকে। পরে বুলগেরিয়ার সরকার একটি বিবৃতিতে জানায়, বিকল্প ব্যবস্থার সাহায্যে বিমানটি অবতরণ করে।
এই ঘটনাকে রাশিয়ার ভয় দেখানোর নীতির অংশ বলে অভিহিত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। বিবৃতিতে ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, হুমকি ও ভয় দেখানো রাশিয়ার ইউরোপের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ আচরণের একটি নিয়মিত অংশ। এই ঘটনা ইউরোপকে ইউক্রেনের পাশে আরও শক্তভাবে দাঁড়াতে প্রতিশ্রুবদ্ধ করেছে বলেও জানানো হয়েছে ওই বিবৃতিতে। এই ঘটনার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিরক্ষা কমিশনার আন্দ্রিয়াস কুবিলিয়াস জানিয়েছেন, জিপিএস হস্তক্ষেপ শনাক্ত করার সক্ষমতা আরও শক্তিশালী করতে নিকটবর্তী কক্ষপথে আরও কিছু স্যাটেলাইট প্রেরণ করবে তারা।
বুলগেরিয়ার দাবি, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে উড়োজাহাজের জিপিএস জ্যামিং। ইউরোপের দাবি, গত বছর লাটভিয়া, লিথুনিয়া ও এস্তোনিয়া—এই তিন বাল্টিক দেশেও হাজার হাজার জিপিএস জ্যামিংয়ের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। এবং এই ধরনের ঘটনার জন্য ইউরোপ বারবারই রাশিয়াকেই দায়ী করে এসেছে। তবে, রাশিয়া বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
উরসুলা ভন ডার লিয়েনকে বহনকারী উড়োজাহাজের জিপিএস জ্যামিংয়ের ব্যাপারে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ‘এ ধরনের দাবি পুরোপুরি ভুল।’
ক্রাইম জোন ২৪