ফাঁকা পড়ে আছে বিএনপির মঞ্চ, দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা


রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আজ বুধবার যে মঞ্চে কর্মসূচি হওয়ার কথা ছিল, সেটি এখন ফাঁকা পড়ে আছে। মঞ্চের পেছনে বসে আছে পুলিশ। বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করায় কর্মসূচি বাতিল হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে গোদাগাড়ী উপজেলা সদরের ডাইংপাড়া মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রশাসন ওই এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ঘটনায় এক পক্ষের নেতা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উপজেলা সদরে একই স্থানে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএনপির দুই পক্ষ। এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ওই দিন বিকেল ৪টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ, পরে সংঘর্ষ হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে পুরো উপজেলা সদরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী মেজর জেনারেল (অব.) শরীফ উদ্দীনের পক্ষের অন্তত সাতজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি নাসির উদ্দিন বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মাসুদ রানা ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গতকাল বিকেল ৫টা থেকে আজ দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ। দুপুরে উপজেলা সদরে সেনাবাহিনীকে টহল দিতে দেখা যায়।
সংঘর্ষ কেন হলো, জানতে চাইলে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী উপজেলা বিএনপির সদস্য সুলতানুল ইসলাম তারেকের পক্ষের নেতা পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, ‘দুই পক্ষ যদি আলাদা জায়গায় অনুষ্ঠান করত, তাহলে কোনো ঝামেলা হতো না। কিন্তু শরীফ উদ্দীনের পক্ষ উপজেলা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠান করতে চেয়েছিল। এ নিয়ে তারা ইউএনও অফিসে আপত্তি জানায়। পরে জানতে পারেন, শরীফ উদ্দীনের অনুসারীরা দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছেন এবং চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছেন। এরপরই সংঘর্ষ শুরু হয়।’
অন্যদিকে শরীফ উদ্দীনের পক্ষের সমর্থক ও উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বলেন, ‘প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমরা মঞ্চ তৈরি করছিলাম। গত সোমবার কাজ চলার সময় সুলতানুলের পক্ষ এসে বাধা দেয়। মঙ্গলবারও তারা বাধা দেয় এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।’
ঘটনার পর রাতেই উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক বেদার উদ্দিন বাদী হয়ে গোদাগাড়ী থানায় মামলা করেন। মামলায় পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। আরও ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪০ জনকে আসামি করা হয়।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় একজন মামলা করছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ক্রাইম জোন ২৪