মিঠাপানির মাছ রপ্তানিতে রেকর্ড


বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে মাছ রপ্তানি রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৫ হাজার ৪৫০ টন। শুধু পরিমাণই নয়, বৈদেশিক মুদ্রা আয়েও এসেছে ইতিবাচক সাফল্য। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪২ টন দেশীয় মাছ। এর আর্থিক মূল্য দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪৭০ কোটি ৬২ লাখ টাকা। রপ্তানিকৃত মাছের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল মিঠাপানির মাছ, ১৩ হাজার ২১০ টন। এ ছাড়া ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ৫৩২ টন। মিঠাপানির মাছগুলোর মধ্যে পাবদা, পাঙাশ, পারসে, ভেটকি, টেংরা, তেলাপিয়া, পোনাসহ কয়েকটি জনপ্রিয় প্রজাতি রপ্তানিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। বেনাপোল বন্দর ও স্থানীয় মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ বন্দর দিয়ে রপ্তানি হয়েছিল ৮ হাজার ২৯২ টন মাছ। সেখান থেকে আয় হয়েছিল ২ কোটি ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা টাকায় দাঁড়ায় ৩১২ কোটি টাকার বেশি। অর্থাৎ এক বছরে মাছ রপ্তানি বেড়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার টন এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয় বেড়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ ডলার বা প্রায় ১৬০ কোটি টাকা।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশীয় মাছ রপ্তানি বাড়ার বিষয়টি জানিয়ে স্থানীয় ফিশ কোয়ারেন্টিন কর্মকর্তা সজীব সাহা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছ রপ্তানি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এই ধারাবাহিকতা যাতে বজায় থাকে, সে জন্য রপ্তানিকারকদের সুবিধা বাড়াতে আমরা কাজ করছি।’
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ মাছ উৎপাদনকারী দেশ। বছরে ১৭ কোটি মানুষের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন প্রায় ৪৮ লাখ টন মাছ। অথচ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে উৎপাদন হয়েছে ৫০ লাখ ১৮ হাজার টন। চাহিদার চেয়ে বেশি উৎপাদনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রপ্তানি ক্রমেই বাড়ছে। গত অর্থবছরে বিভিন্ন দেশে মোট ৯১ হাজার টন মাছ ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যার বাজারমূল্য ছিল ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল বেনাপোল বন্দর দিয়েই রপ্তানি হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪২ টন মাছ।
রপ্তানিকারকেরা বলছেন, রপ্তানি বেড়েছে ঠিকই, তবে কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সংগ্রহ করতে হয় খুলনা থেকে, যা বেনাপোল থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে। এতে সময় নষ্ট হয় এবং পচনশীল পণ্য হওয়ায় মাছ দ্রুত সরবরাহে সমস্যা হয়।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুলনা থেকে ছাড়পত্র আনতে হয় বলে রপ্তানিতে দেরি হয়। যদি বেনাপোলেই এ সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে সময় বাঁচবে, রপ্তানি বাড়বে, আর বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও অনেক বেশি হবে।’
ক্রাইম জোন ২৪