ন্যায় ও মানবাধিকারের অনন্য দৃষ্টান্ত


রাষ্ট্র পরিচালনা মানব সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি শুধুমাত্র রাজনৈতিক কার্যক্রম নয়, বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক জীবনের পূর্ণাঙ্গ নির্দেশনা। নবী করিম (সা.)-এর সুন্নাহ রাষ্ট্র পরিচালনার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। মদিনায় ইসলামের প্রথম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় তিনি প্রমাণ করেছেন কীভাবে ন্যায়, সাম্য, মানবাধিকার ও কল্যাণনির্ভর শাসন সম্ভব।
ন্যায়বিচার রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি। ধনী-গরিব, মুসলিম-অমুসলিম—সবার জন্য সমান ন্যায় নিশ্চিত করা নবী সা.-এর মৌলিক শিক্ষা। তিনি প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে শুরার গুরুত্ব দেন; সাহাবাদের মতামত নিয়মিত গ্রহণ করতেন। মানবাধিকার ও সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা সর্বদা নিশ্চিত হয়েছিল।
নবী (সা.) বলেছিলেন, প্রত্যেক নেতা তার অধীনস্থদের জন্য জবাবদিহির মুখোমুখি হবে। তাই নেতৃত্ব মানে ক্ষমতা নয়—জনগণের সেবা, দায়িত্ব ও আমানত রক্ষা। তিনি দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন।
প্রশাসনে স্বচ্ছতা, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ, শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠা, সামাজিক দ্বন্দ্ব মীমাংসা, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ এবং দারিদ্র্য বিমোচন—এসবই সুন্নাহর নির্দেশনা।
পরিশেষে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের রাষ্ট্রনীতি আধুনিক রাষ্ট্রের জন্যও দিকনির্দেশক। ন্যায়বিচার, শুরা, মানবাধিকার, দয়া, কল্যাণ, জবাবদিহি, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, শিক্ষা, শান্তি, সামাজিক ন্যায় ও পরিবেশ সংরক্ষণ—এসব নীতি যে কোনো রাষ্ট্রকে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির পথে পরিচালিত করতে সক্ষম। মুসলিম উম্মাহর জন্য এটি অনুসরণের এক অমূল্য দিকনির্দেশনা, যা সমাজে ন্যায়, কল্যাণ ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে।
লেখক: প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি
ক্রাইম জোন ২৪