কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনিয়মের সত্যতা পেল দুদক


গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ সোমবার দুপুরে হাসপাতালটিতে অভিযান চালান দুদক কর্মকর্তারা। তাঁরা হাসপাতালে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সময়মতো কর্মস্থলে না আসা, টিকিটের অতিরিক্ত মূল্য আদায়, নষ্ট যন্ত্রপাতি, রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহসহ একাধিক অভিযোগের প্রমাণ পান।
দুদক গাজীপুরের উপপরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করে। দুদকের কাছে আগে থেকেই হাসপাতালটির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ ছিল। তদন্তে দেখা যায়, হাসপাতালে কর্মরত অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সময়মতো অফিসে আসেন না, যার ফলে রোগীরা সময়মতো সেবা থেকে বঞ্চিত হয়। এ ছাড়া সরকার-নির্ধারিত ৩ টাকার টিকিটের পরিবর্তে রোগীদের কাছ থেকে ৫ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
অভিযানে আরও দেখা যায়, হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ আলট্রাসনোগ্রাম ও এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে অচল ও নষ্ট হয়ে রয়েছে। এতে রোগীরা অতিরিক্ত টাকা খরচ করে বাইরে থেকে এসব পরীক্ষা করাতে বাধ্য হচ্ছে। রোগীদের জন্য বরাদ্দ খাবার পরিমাণে কম দেওয়া হচ্ছে এবং খাবারের মানও অত্যন্ত নিম্ন। হাসপাতালের রান্নাঘরসহ সার্বিক পরিবেশ ছিল অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা। এ ছাড়া হাসপাতালের স্টোরে রক্ষিত মালপত্রের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবের কোনো মিল পাওয়া যায়নি, যা বড় ধরনের দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়।
এ ব্যাপারে দুদকের উপপরিচালক এনামুল হক বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই অভিযান পরিচালনা করেছি। আমাদের তদন্তে অভিযোগগুলোর সত্যতা মিলেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিজেও এসব অনিয়মের দায় স্বীকার করেছেন। জনগণের অর্থ ও সরকারি সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিতে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
অন্যদিকে নিজের ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজোওয়ানা রশিদ বলেন, ‘আমি প্রতিটি দপ্তরের কাজ নির্দিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে ভাগ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা তাঁদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। তাঁদের ব্যর্থতার কারণেই আজকে সবকিছুর দায়ভার আমাকে নিতে হচ্ছে।’
ক্রাইম জোন ২৪