দুদকের গণশুনানিতে অভিযোগ করায় চেয়ারম্যানের মারধর


টাঙ্গাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আয়োজনে আজ সোমবার গণশুনানি হয়েছে। এতে অভিযোগ করায় সদর উপজেলার মগড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ একজনকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী অভিযোগকারী নজরুল ইসলাম ছোট বাসালিয়া তালতলা এলাকার বাসিন্দা। তাঁর স্ত্রী চায়না বেগম জানান, চেয়ারম্যান হারুনের বিরুদ্ধে দুদকের গণশুনানিতে অভিযোগ করেন নজরুল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানের লোকজন তাঁকে সকালে নির্যাতন করে ধরে নিয়ে যায়। বিষয়টি পরে শুনানিতে দুদক কমিশনারকে জানালে তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ বলেন, চায়নার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হয়েছে। আহত নজরুল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
এদিকে আজ শুনানিতে ২৯টি দপ্তরের বিরুদ্ধে ১৫১টি অভিযোগ আনেন ভুক্তভোগীরা। এর মধ্যে ৬৯টির শুনানি হয়। তাৎক্ষণিকভাবে নিষ্পত্তি করা হয় ৩৮টি অভিযোগের। ছয়টি অভিযোগ অনুসন্ধানের আওতায় আনা হয় এবং ২৫ জন অভিযোগকারী অনুপস্থিত ছিলেন।
জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে অনুষ্ঠিত এই গণশুনানি করেন দুদকের কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবার আজিজী।
শুনানিতে টাঙ্গাইল শহরের বিভিন্ন খাল দখলের অভিযোগ আনা হয় পৌরসভার বিরুদ্ধে; যার মধ্যে ছিল শ্যামা খাল দখল করে একাধিক মার্কেট নির্মাণ ও বিভিন্ন খাল উদ্ধারের পরিবর্তে ড্রেন করা। পাশাপাশি বহুতল ভবন নির্মাণের নামে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে উচ্ছেদ করার অভিযোগ আনা হয় সাবেক মেয়রদের বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া সদর উপজেলার মগড়াসহ বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের বিরুদ্ধে টিআর, কাবিটার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয় বন বিভাগের বিরুদ্ধে। মিটার না দেখে বেশি বিল করার অভিযোগ তোলা হয় বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে।
কালিহাতীর তোফাজ্জল হোসেন খান তুহিন কারিগরি কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিরুদ্ধে নিয়োগ-বাণিজ্য, অর্থ আত্মসাৎসহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ দেওয়া হয়।
দুদক কর্মকর্তারা কিছু অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে দুদকের কেন্দ্রীয় কার্যালয় তদন্ত করবে বলে ঘোষণা দেন। কিছু অভিযোগ জেলা প্রশাসন ও জেলা দুদকের কর্মকর্তাকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শরীফা হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অভিযোগের জবাব দেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ও পৌরসভার প্রশাসক শিহাব রায়হান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু নাসের মোহসিন হোসেন, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
ক্রাইম জোন ২৪