রাজনৈতিক আলাপের অভ্যাসটা জরুরি


অনুদানের সিনেমা দিয়ে প্রযোজক হিসেবে অভিষেক হচ্ছে। এখন কোন পর্যায়ে রয়েছে ‘রূহের কাফেলা’ সিনেমার কাজ?
সিনেমার চূড়ান্ত চিত্রনাট্যের কাজ শেষের দিকে। লোকেশন বাছাই, অভিনয়শিল্পী নির্বাচনের কাজগুলো শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব শুটিংয়ে যেতে চাই। গত বুধবার অনুদানের প্রথম কিস্তির চেক বুঝে পেয়েছি। আশা করছি, একটি ভালো কাজ উপহার দিতে পারব।
সিনেমার গল্প কী নিয়ে?
গল্পটা খুব সুন্দর। এটি বানাবেন সৈয়দা নীলিমা দোলা। গল্পের সুবাদে আমরা একসঙ্গে হয়েছি। একটি মাদ্রাসার ছেলেকে নিয়ে গল্প। সে আর্টিস্ট কিন্তু অন্ধ। সে তার মাকে খুঁজতে নামে। অন্ধ ছেলেটির মাকে খোঁজার জার্নির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে একটা ভিন্ন দৃষ্টিতে দেখা যাবে। গল্পটি নির্মাতা দোলা অনেক দিন ধরে নিজের কাছে লালন করে রেখেছেন। এর পেছনে তাঁর অনেক দিনের শ্রম লুকিয়ে রয়েছে। এখন গল্পটি পর্দায় তুলে ধরার পালা।
সরকারি অনুদানের সিনেমা নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেওয়া থাকে; কিন্তু বেশির ভাগ কাজ সময়ের মধ্যে শেষ হয় না। রূহের কাফেলা কি বেঁধে দেওয়া সময়ে শেষ হবে?
অনুদানের সিনেমা নির্দিষ্ট সময়ে শেষ না হওয়ার একটা বদনাম রয়েছে। এটা আমাদের মাথায় আছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সবার আগে রূহের কাফেলা মন্ত্রণালয়ে জমা দেব। সর্বোচ্চ চেষ্টা করব কথা রাখতে।
‘এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি’ নামের সিনেমা পরিচালনা করেছেন। সিনেমাটি সম্পর্কে জানতে চাই।
রাজনৈতিক আলাপের অভ্যাসটা জরুরি। মানুষ যত রাজনৈতিকভাবে সচেতন হবে, তত দেশকে নিয়ে ভাবতে শিখবে। আমরা সারা জীবন দেখে এসেছি হোটেলে, বাসে, রেস্টুরেন্টে বড় করে লেখা থাকে, এখানে রাজনৈতিক আলাপ নিষিদ্ধ। রাজনৈতিক আলাপ করাকে ট্যাবু হিসেবে দেখে এসেছি আমরা। এই ট্যাবুকে ভাঙার লক্ষ্যে সিনেমাটি করা। রাজনৈতিক আলাপ নিষেধ, এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্ম রাজনৈতিকভাবে অসচেতন হয়ে পড়ে। তারা রাজনীতি সম্পর্কে জানে না বলে তাদের কাছে ভুল তথ্য বেশি। বলা হয় রাজনৈতিক সচেতনতা আমাদের মধ্যে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে নেই। কিন্তু গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানের সময় আমরা দেখলাম, আমাদের এই ধারণা পুরোপুরি সত্য নয়। রাজনৈতিক সচেতনতা না থাকলে এত বড় মুভমেন্ট সম্ভব ছিল না। এ বিষয়গুলো নিয়ে সিনেমাটি তৈরি করেছি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন সময়ের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। আমি চেয়েছি, রাজনীতি নিয়ে আলাপের অভ্যাস যেন তৈরি হয়। সিনেমাটি প্রযোজনা করেছেন খালিদ মাহবুব তূর্য।
এতে কারা অভিনয় করেছেন?
অভিজ্ঞ শিল্পীদের পাশাপাশি নতুন অনেকেই কাজ করেছেন। অভিনয় করেছেন আজাদ আবুল কালাম, এ কে আজাদ সেতু, ইমতিয়াজ বর্ষণ, কেয়া আল জান্নাহ, মুক্তসহ অনেকে। একটি অতিথি চরিত্রে আমাকেও দেখা যাবে।
সিনেমাটি কবে মুক্তি পাবে?
ইতিমধ্যে চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড থেকে ছাড়পত্র পেয়েছি। ইচ্ছা আছে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর নাগাদ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি দেওয়ার। এখনো স্পনসরশিপের জটিলতা রয়েছে। এগুলো মিটে গেলে আনুষ্ঠানিকভাবে মুক্তির তারিখ ঘোষণা করা হবে।
এখন তো সবাই ঈদে সিনেমা মুক্তি দিতে চায়। প্রথম সিনেমা নিয়ে আপনি ভিন্ন পথে হাঁটতে চাইছেন। একটু ঝুঁকি হয়ে যাচ্ছে কি?
ঈদে আমরা সব সিনেমা দেখতে চাই, দেখাতে চাই। এটা আসলে উচিত নয়। সারা বছর সিনেমা মুক্তি দেওয়া উচিত। আমরা সিনেমাটি বানিয়েছি দর্শকদের জন্য। কোন সময়ে মুক্তি দেব, তা চিন্তা করে বানাইনি। সিনেমাটি যেহেতু রাজনৈতিক আলাপ নিয়ে তৈরি, আমি চাই, সব শ্রেণির দর্শক সিনেমাটি দেখুক।
আপনি শিল্পী, সুরকার, গীতিকার, নির্মাতা ও প্রযোজক। এত কাজ একসঙ্গে সমন্বয় করতে অসুবিধা হয় না?
একটু তো হয়। তবে প্রতিটি সেক্টর শিল্পের সঙ্গে জড়িত। তাই চেষ্টা করছি প্রতিটি কাজ ভালো করার। এ ছাড়া আমি তা-ই করছি, যেটা করতে ভালোবাসি।
নতুন গান কবে আসবে?
এখানে রাজনৈতিক আলাপ জরুরি সিনেমায় আমার একটি গান থাকবে। এ ছাড়া আরও দুটি গান প্রস্তুত হয়েছে। নির্মাণ নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে রিলিজ করা হয়ে উঠছে না। আশা করছি, শিগগির নতুন গান নিয়ে আসব।
ক্রাইম জোন ২৪