পটুয়াখালীতে বিচারককে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ, পিপির সদস্যপদ স্থগিত


পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে বিচারককে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতি তাঁর সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে নোটিশ দিয়েছে।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (সিনিয়র জেলা জজ) নীলুফার শিরিন বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর পাঠানো লিখিত অভিযোগে জানান, গতকাল ২০ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে তাঁর গৃহপরিচারিকার মাধ্যমে মামলার নথিপত্রের সঙ্গে ৫০০ টাকা নোটের আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার বান্ডিল পাঠান পিপি রুহুল আমিন।
অভিযোগপত্রে নীলুফার শিরিন আরও উল্লেখ করেন, নারী ও শিশুবিষয়ক একটি মামলায় আসামিপক্ষের জামিনের সুপারিশ করতে একাধিকবার মোবাইলে যোগাযোগ করেছিলেন রুহুল আমিন। এ ছাড়া জুলাইতে শহীদ জসিম উদ্দীনের মেয়ের ধর্ষণ মামলায়ও আসামিপক্ষের হয়ে যোগাযোগের চেষ্টা চালানোর অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
বিচারক নীলুফার শিরিন লিখেছেন, ‘এভাবে ঘুষ দেওয়ার ঘটনায় আমি মারাত্মকভাবে অপমানিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছি। পরে বিষয়টি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং পটুয়াখালী আদালতের সরকারি কৌঁসুলিকে জানাই। তাঁরাও আমাকে অভিযোগ ছোট করে না দেখার পরামর্শ দেন।’
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির বলেন, একজন সরকারি কৌঁসুলির পক্ষ থেকে বিচারকের কাছে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা অত্যন্ত কলঙ্কজনক। আজকের জরুরি সভায় অধিকাংশ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে তাঁর সদস্যপদ স্থগিত এবং লিখিত জবাব তলব করা হয়েছে।
তবে পিপি রুহুল আমিন তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ‘এটি আইনজীবীদের একটি ষড়যন্ত্র। আমি দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে আইন পেশায় কাজ করে আসছি।’
পটুয়াখালী আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মজিবুর রহমান টোটান বলেন, ‘যে কাজটি নারী ও শিশু কোর্টের পিপি সাহেব ঘটিয়েছেন, এটি বিচার বিভাগে নজির। তাঁর জন্য আজ সকল আইনজীবী লজ্জিত। ইতিমধ্যে আইনজীবী সমিতির জরুরি সভায় সবার সম্মতিক্রমে তাঁর পদ স্থগিত করা হয়েছে এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
ক্রাইম জোন ২৪