শিরোনাম
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় বাড়ছে অপরাধরপ্তানিতে আরও মজবুত অবস্থান বাংলাদেশেরবিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলের ‘আপত্তিকর ভিডিও’ তদন্তে চার সদস্যের কমিটিখালাসের বিরুদ্ধে শুনানি চলছে আপিল বিভাগেবিদেশ–বিভুঁইয়ে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের দিন কাটছে যেভাবেলাজ ফার্মার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী পেলেন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকাভোটের মাঠে পুলিশ-আর্মি যথেষ্ঠ নয়, স্কুলছাত্রদেরও চান এবি পার্টির চেয়ারম্যানস্থগিত হওয়া মনোনয়নপত্র বিতরণ রোববার থেকে শুরুএকই স্থানে বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষ-ভাঙচুর, আহত ৬বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতি বরিশাল জেলা শাখা কমিটির পরিচিতি সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান

বিদেশ–বিভুঁইয়ে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের দিন কাটছে যেভাবে

বিদেশ–বিভুঁইয়ে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাদের দিন কাটছে যেভাবে

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ ও তরুণ নেতাদের জীবন কাটছে কলকাতার নিউটাউনে নির্বাসনে। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাবেক সংসদ সদস্য প্রতিদিন অনলাইন বৈঠক ও রাজনৈতিক পরিকল্পনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। পরিবার থেকে দূরে থেকেও তাঁরা দলের মনোবল ধরে রাখার চেষ্টা করছেন এবং ‘ফিরে আসার লড়াই’য়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্যদিকে প্রবাসী কূটনীতিক হারুন আল রশিদ অটোয়ায় লেখালেখিতে মন দিয়েছেন, লিখছেন বাংলাদেশের ইতিহাস ঘিরে একটি উপন্যাস।

প্রতিবেশী দেশ ও বিদেশ বিভুঁইয়ে কীভাবে আওয়ামী লীগ নেতাদের দিন কাটছে— তাদের সঙ্গে কথা বলে এক প্রতিবেদনে তা তুলে ধরেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট। আজকের পত্রিকার পাঠকদের জন্য প্রতিবেদনটির অনুবাদ তুলে ধরা হলো—

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন। তিনি ভারতে আশ্রয় নিয়ে রাজধানী দিল্লিতে থাকছেন। হাসিনার পথ ধরে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও প্রতিবেশী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। মোহাম্মদ এ আরাফাত তাঁদেরই একজন।

ভারতে যাওয়ার পর থেকে গত এক বছরে কোনো নতুন বা পুরোনো শখের পেছনে ছোটার ফুরসত পাননি বাংলাদেশের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরাফাত। দলীয় কাজ এবং ইউনূস সরকারকে উৎখাত করে হাসিনাকে দেশে ফেরানোর স্বপ্নই তাঁকে ব্যস্ত রাখছে। শুধু তাঁর নয়, আওয়ামী লীগের সবার দাবি, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার ‘অবৈধ’।

টেলিফোনে দ্য প্রিন্টকে আরাফাত বলেন, ‘হাসিনা চলে যাওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ এক অতল খাদের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। আমার একটাই লক্ষ্য: বাংলাদেশে আবার সবকিছু ঠিক করা। এখন আমার সত্যিই কোনো শখ নেই, কোনো খেলাধূলার সময় নেই, অথবা অন্য কোনো বিনোদনে গা ভাসানোর অবকাশ নেই।’

আরাফাতের জন্য কাজ মানে হলো, বাংলাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচির পরিকল্পনা করা এবং নির্বাসনে থাকা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা ও তৃণমূল কর্মীদের সঙ্গে প্রতিদিন যোগাযোগ রাখা।

গত এক বছরে সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ, দলটির যুবসংগঠন যুবলীগ আর ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ ও মধ্যপর্যায়ের ১ হাজার ৩০০-এর মতো নেতা-কর্মী ভারত ও বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় নির্বাসনে আছেন।

তারপর গত এক বছরে সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ, দলটির যুবসংগঠন যুবলীগ আর ছাত্রসংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ ও মধ্যপর্যায়ের ১ হাজার ৩০০-এর মতো নেতা-কর্মী ভারত ও বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় নির্বাসনে আছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির এক সাবেক সদস্য বলেছেন, শুধু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীরাই নির্বাসনে গেছেন, তেমনটা নয়। তাঁদের সঙ্গে সাংবাদিক, নাগরিক সমাজের অধিকারকর্মী, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তা ও কূটনীতিকেরাও যোগ দিয়েছেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের প্রতিহিংসামূলক অভিযানের কারণে’ তাঁরা বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

যাঁরা ভারতে আছেন, তাঁদের বেশির ভাগই আছেন কলকাতার নিউটাউনে। এটি কলকাতার প্রান্তে দ্রুত বাড়তে থাকা একটি পরিকল্পিত উপশহর।

চওড়া রাস্তা, সাধ্যের মধ্যে ভাড়ায় অ্যাপার্টমেন্ট, বিপণিকেন্দ্র, ফিটনেস সেন্টার এবং নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছাকাছি অবস্থান নিউটাউনকে দেশছাড়া ব্যক্তিদের বসবাসের আদর্শ কেন্দ্রে পরিণত করেছে।

বাংলাদেশে ফেলে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের থেকে দূরে এই সব ব্যক্তির জীবন একটি ছকে পড়ে গেছে: ফজরের নামাজ পড়া, জিমে যাওয়া বা সকালে হাঁটা, প্রতি সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ও বিশ্বের অন্যান্য স্থানে থাকা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক এবং প্রত্যাবর্তনের আশায় থাকা।

দেশছাড়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, যাঁকে গত অক্টোবরে ওই এলাকায় দেখা গিয়েছিল।

২০২৪ সালের ২ অক্টোবর বাংলাদেশে একটি খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সেখানকার সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে কলকাতার বিখ্যাত বিনোদন পার্ক নিক্কো পার্কে দেখা গেছে।

কেউ কামালকে দেশ ছাড়তে দেখেননি। তিনি কীভাবে ঢাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে কলকাতায় উপস্থিত হলেন, এটা জনগণকে বোঝাতে ঢাকার বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

তত দিনে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় সংঘটিত কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের মামলায় আসাদুজ্জামান খানের নাম এসেছে।

হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ সরকারের যে কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যের অবস্থানের হদিস জানা যায়নি, তাঁদের একজন সাবেক এ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

বাংলাদেশে সে সময় পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত) শাহ আলম স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। যদি তাঁরা ইমিগ্রেশন পার হয়ে যেতেন, তবে আমাদের কাছে প্রমাণ থাকত। তাঁদের ক্ষেত্রে কোনো প্রমাণ নেই… অনেকে [আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতা] অবৈধভাবে দেশ ত্যাগ করেছেন। কেউ কেউ এখনো দেশে আছেন এবং অনেককে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো গ্রেপ্তার করেছে।’

নিউটাউনে বসবাস করা আওয়ামী লীগের এক সাবেক সংসদ সদস্য দ্য প্রিন্টকে বলেন, তিনি নিয়মিত আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে দেখা করেন।

এই সাবেক সংসদ সদস্যের ভাষ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এখন ওই এলাকায় একটি বড় অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নিয়েছেন, যেখানে নিয়মিত তাঁর দলের সহকর্মী ও নিউটাউনের বর্তমান প্রতিবেশীরা আসেন। তিনি অতিথি আপ্যায়ন করেন।

আসাদুজ্জামান খান কলকাতায় তাঁর স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকেন। দলীয় বৈঠকের জন্য তিনি প্রতি সপ্তাহে দিল্লিতে যান। তিনি সেখানে ভারতের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দেখা করেন। তাঁর ছেলে শাফি মুদ্দাসির খান (জ্যোতি) গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকায় গ্রেপ্তার হন।

সাবেক ওই সংসদ সদস্য আরও বলেন, আসাদুজ্জামান খানকে দলের নেতা ও কর্মীদের মনোবল ঠিক রাখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এই সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, আসাদুজ্জামান খান তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে আসা দলীয় সহকর্মীদের রোজ বার্তা দেন, ‘আমরা এখানে বিশ্রাম নিতে বা স্থায়ীভাবে থাকতে আসিনি। আমরা এখানে বেঁচে থাকার জন্য এসেছি এবং আগামী লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে এসেছি।’

আসাদুজ্জামান খানকে প্রতি সপ্তাহে দিল্লি ভ্রমণ এবং কলকাতায় প্রতিদিনের বৈঠক নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা গত বছরের আগস্টের তুলনায় এখন শ্বাস ফেলার অবকাশ পাচ্ছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের কক্সবাজারের সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, এখন জীবন একটি নির্দিষ্ট ছকে পড়ে গেছে।

এই সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, ‘আমি ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠি এবং ঘরেই ফজরের নামাজ পড়ি। আওয়ামী লীগের আরেক সংসদ সদস্যের সঙ্গে আমি একটি থ্রিবিএইচকে [তিন শয়নকক্ষ, হলঘর ও রান্নাঘর] অ্যাপার্টমেন্টে থাকি। নামাজের পর আমরা দুজনই পাশের একটি ফিটনেস স্টুডিওতে যাই, সেটি বেশ ভালো। আমি ভারোত্তোলন করি আর আমার ফ্ল্যাটমেট পিলাটিসের (একধরনের ব্যায়াম) ক্লাস করেন।’

কেউ কামালকে দেশ ছাড়তে দেখেননি। তিনি কীভাবে ঢাকা থেকে অদৃশ্য হয়ে কলকাতায় উপস্থিত হলেন, এটা জনগণকে বোঝাতে ঢাকার বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

দেড় হাজার বর্গফুটের ওই অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া মাসে ৩০ হাজার রুপি। ওই সাবেক সংসদ সদস্যের কাছে ভাড়াটা খুব বেশি মনে হয় না। তবে তাঁদের মৃদু বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, রান্নার লোক ও ঘরবাড়ি পরিষ্কার করার লোকেদের বিনা নোটিশে কাজে না আসা।

ওই সাবেক সংসদ সদস্য হালকা সুরে বলেন, ‘আমার রান্না করার অভ্যাস নেই। আমার ফ্ল্যাটমেটেরও একই অবস্থা। তাই যেসব দিনে আমরা রান্না করতে বাধ্য হই, সেসব দিনে আমি ঢাকায় থাকা আমার স্ত্রীকে ভিডিও কল করি। তিনি বিস্তারিত নির্দেশনা দেন। এটা আমার জন্য নতুন। যখন আমি বাংলাদেশে বাড়িতে ফিরে যাব, কে জানে আমি হয়তো শেফ হিসেবে নতুন পেশাজীবন শুরু করতে পারব।’

দুপুরের খাবারের পর একটু ঘুমিয়ে নেওয়ার পর সন্ধ্যাগুলো কাটে বাংলাদেশ, ভারত ও অন্যান্য দেশে থাকা আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য ও কর্মীদের সঙ্গে অনলাইন বৈঠক করে।

সদস্যরা তাঁদের সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক খবর আদান–প্রদান করেন, বিশ্লেষণ করেন এবং নিজেদের পরবর্তী পদক্ষেপের পরিকল্পনা সাজান।

সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে কলকাতায় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গোপন দলীয় কার্যালয়’ নিয়ে খবর প্রকাশ পেয়েছে, যেটি সম্পর্কে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অবগত আছে। কক্সবাজারের ওই সাবেক সংসদ সদস্য এই খবর অস্বীকার করেছেন।

ওই সাবেক সংসদ সদস্য বলেন, ‘হ্যাঁ, নিউটাউনে আমরা একটি জায়গা ভাড়া নিয়েছি, যেখানে আমরা সবাই দেখা করি। কলকাতায় প্রায় ১ হাজার ৩০০ দলীয় নেতা আছেন। আমাদের পক্ষে তো সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বসার ঘরে সবাই মিলে বসা সম্ভব হবে না! কিন্তু এটিকে [দলীয়] কার্যালয় বলা হলে সেটা অতিরিক্ত বাড়িয়ে বলা হবে।’

কলকাতার নিউটাউন থেকে বহু দূরে কানাডার অটোয়ার কাছে একটি নিরিবিলি এলাকায় নতুন জীবন শুরু করেছেন বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ হারুন আল রশিদ।

হারুন আল রশিদ আওয়ামী লীগের সদস্য নন। তবে শেখ মুজিবুর রহমানের সোচ্চার সমর্থক এবং ইউনূস প্রশাসনের তীব্র সমালোচক হওয়ায় তিনি দলটির কার্যপরিধির অংশ।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে হারুন আল রশিদকে দেশে ফিরতে বলা হয়। তখন তিনি মরক্কোয় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি দেশে ফেরা পিছিয়ে দেন এবং ফেসবুকে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে পোস্ট দেন।

হারুন আল রশিদ দ্য প্রিন্টকে বলেন, ‘আমি আমার পোস্টের শিরোনাম দিয়েছিলাম, “বাংলাদেশের জন্য এবং নিজের জন্য একটি আবেদন”। এর প্রতিক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার আমার ও আমার পরিবারের পাসপোর্ট বাতিল করে দেয়।’ এখন অটোয়ায় তাঁর বেশির ভাগ সময় কাটে লেখালেখি করে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি যতটা চাই, তার চেয়ে কম পড়ি, কিন্তু বাড়ির কোথাও না কোথাও আমি একটি বই খোলা রাখি। সকালের চায়ের সঙ্গে পাঁচটি পৃষ্ঠা আর ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি অধ্যায়।’

হারুন আল রশিদ জানান, তিনি এখন নিজের আয়ের ব্যবস্থা নিজেই করছেন। কখনো কখনো এসব নিয়ে তিনি কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি সাধারণ জীবনযাপন করেন এবং যে কাজ তাঁকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে নিয়ে যাবে, সে ধরনের কাজ করেন না।

ইউনূসকে নিয়ে ক্ষোভের ফাঁকেও রশিদ যখন টেবিলে বসে একটি ঝরঝরে অনুচ্ছেদ লিখতে পারেন, তখন তাঁর দিনটি ভালো হয়ে যায়। এ ধরনের দিনগুলোতেই রচিত হচ্ছে তাঁর প্রথম কল্পকাহিনির খসড়া, বাংলাদেশকে নিয়ে লেখা এক নিরাশাময় উপন্যাস।

রশিদের উপন্যাসের নাম ‘দ্য ম্যাপমেকার্স প্রেয়ার্স’। সেখানে হারুন আল রশিদের গল্প আবর্তিত হয়েছে কাল্পনিক চরিত্র ওয়াদুদকে কেন্দ্র করে। ১৯৪৬ সালের দাঙ্গা থেকে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম পর্যন্ত সময়জুড়ে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে কলকাতায় ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গোপন দলীয় কার্যালয়’ নিয়ে খবর প্রকাশ পেয়েছে, যেটি সম্পর্কে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অবগত আছে। কক্সবাজারের ওই সাবেক সংসদ সদস্য এই খবর অস্বীকার করেছেন।

হারুন আল রশিদ বলেন, ‘ছোটবেলায় আমার নায়ক ওয়াদুদ দেখেছে, তার হিন্দু প্রতিবেশীদের জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং তার বন্ধু বাবুলের পরিবারকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। আমার উপন্যাসটি মূলত ওয়াদুদ এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে।’

কল্পিত ওয়াদুদের জগৎটি নিরাশায় কালো। এদিকে ঢাকা থেকে আসা আওয়ামী লীগের এক সাবেক তরুণ সংসদ সদস্য আনন্দের কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন।

ওই সাবেক সংসদ সদস্য, যিনি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে নিউটাউনের একটি ২বিএইচকে অ্যাপার্টমেন্টে একা থাকছেন, তিনি অবকাশের সুযোগে নিজের মাথায় চুল প্রতিস্থাপন করিয়েছেন। ওই তরুণ বলেন, ‘আমি যখন ঢাকা থেকে পালিয়ে আসি, তখন আমার মাথার চুল কমে গিয়েছিল। আমার স্ত্রী আমাকে কয়েক বছর ধরে চুল প্রতিস্থাপন করতে বলছিলেন। কিন্তু প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় আমি আমার নির্বাচনী এলাকা নিয়ে এত ব্যস্ত ছিলাম যে ঢাকায় কখনো সময় বের করতে পারিনি।’

ওই সাবেক তরুণ সংসদ সদস্য ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে দিল্লিতে পৌঁছান। দক্ষিণ দিল্লির একটি কেন্দ্রে চুল প্রতিস্থাপন করে তিনি নিজেকে নতুন চেহারা দিয়েছেন। তিনি বলেন, এমন কঠিন সময়ে মাথাভর্তি নতুন চুল কিছুটা হলেও ভালো লাগার কারণ।

(বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং এর সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ)


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button