বিয়ের আংটির জন্য খনি থেকে হিরা নিজেই খুঁজে আনলেন মার্কিন তরুণী


বিয়ের আগে অনেকেই জীবনের সঙ্গীকে খুঁজে পান। কিন্তু নিউইয়র্কের মিশের ফক্স খুঁজে পেলেন জীবনের সঙ্গীর পাশাপাশি এক অমূল্য হিরাও। ৩১ বছর বয়সী ফক্স দুই বছর আগে সিদ্ধান্ত নেন, নিজের বিয়ের আংটির জন্য হিরা তিনি নিজেই খুঁজে বের করবেন। আর এর জন্য তিনি পৃথিবীর যে কোনো জায়গায় যেতে প্রস্তুত ছিলেন।
তবে গবেষণা করে ফক্স জানতে পারেন, যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের ক্রেটার অব ডায়মন্ডস স্টেট পার্ক–ই একমাত্র জায়গা যেখানে জনসাধারণ নিজেরাই হিরা খুঁজে বের করেন এবং নিজের কাছে রাখতে পারেন।
গ্র্যাজুয়েট পড়াশোনা শেষ করার পর, প্রেমিকের সমর্থন পেয়ে ফক্স গত ৮ জুলাই ক্রেটার অব ডায়মন্ডস স্টেট পার্কে পৌঁছান। পরবর্তী তিন সপ্তাহে তিনি প্রায় প্রতিদিনই গ্রীষ্মের তীব্র গরমে খনন চালিয়ে যান। অবশেষ পার্কের ৩৭.৫ একর জুড়ে বিস্তৃত অনুসন্ধান ক্ষেত্রের মধ্যে হাঁটার সময় হঠাৎ পায়ের কাছে এক ঝলক আলো চোখে পড়ে তাঁর। প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, এটি শিশিরে ভেজা মাকড়সার জাল। কিন্তু কাছে গিয়ে দেখেন উজ্জ্বল একটি পাথর।
ফক্স বলেন, ‘আগে কখনো হাতে নিয়ে হিরা দেখিনি। কিন্তু এটা ছিল আমার দেখা সবচেয়ে ‘হিরের মতো’ হিরা। পার্ক কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে জানায়, এটি একটি সাদা হিরা, ওজন ২.৩ ক্যারাট। শুধু তাই নয়, এটি এ বছর সেখানে পাওয়া তৃতীয় বৃহত্তম হিরা।
উত্তেজনায় হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন ফক্স। তিনি বলেন, ‘আমি কেঁদে ফেলেছিলাম, তারপর হেসেছিলাম। জানতাম, এটাই আমার আজীবনের পাথর।’ নিজের নামের সঙ্গে প্রেমিকের পদবি যোগ করে হিরাটির নাম দেন তিনি ‘ফক্স বালু ডায়মন্ড’।
ফক্সের মতে, এই অভিজ্ঞতা শুধু হিরা পাওয়ার নয়, বরং জীবনের একটি শিক্ষা। তিনি বলেন, ‘টাকা দিয়ে অনেক সমস্যা সমাধান করা যায়। কিন্তু বিয়েতে কখনো টাকা ফুরিয়ে যেতে পারে। তখন দরকার পরিশ্রমের মাধ্যমে সমাধান করার ক্ষমতা।’
ক্রেটার অব ডায়মন্ডস স্টেট পার্কে প্রতিবছর শত শত মানুষ হিরের খোঁজে আসেন। এখানে ‘ফাইন্ডারস কিপারস’ নীতি চালু আছে। অর্থাৎ যিনি পাবেন, হিরা তাঁরই। এ বছর এখন পর্যন্ত ৩৬৬টি হিরা নিবন্ধিত হয়েছে, যার মধ্যে ১১ টির ওজন এক ক্যারাটের বেশি। ১৯০৬ সালে এখানে প্রথম হিরা আবিষ্কারের পর থেকে ৭৫ হাজারের বেশি হিরা পাওয়া গেছে।
এখানে পাওয়া সবচেয়ে বড় হিরাটি ৪০.২৩ ক্যারেট ওজনের। ‘আঙ্কল স্যাম’ নামের এই হিরাটি পাওয়া গিয়েছিল ১৯২৪ সালে। বর্তমানে এটি যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্ট্রিতে সংরক্ষিত আছে।
ক্রাইম জোন ২৪