ক্ষমতার বাইরে গিয়ে ডিসি লিজ দিলেন জায়গা


চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের বিরুদ্ধে নিজ ক্ষমতার বাইরে গিয়ে এবং সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করে সরকারি খাস জায়গা পাঁচ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দিয়েছেন। ১০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি অস্থায়ী ভাড়ানামা চুক্তিপত্র সম্পাদনের মাধ্যমে সরকারি এই জায়গা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, ডিসি নিজেই ক্ষমতাবলে প্রথম পক্ষ হিসেবে ওই চুক্তিপত্র সম্পাদন ও স্বাক্ষর করেছেন। এভাবে নগরের পরীর পাহাড়ে গত বছর জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদকৃত ২৩ শতকের বেশি জায়গা গোপনে দুটি পক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে।
বাংলাদেশ ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়াল, খাসজমি বন্দোবস্ত নীতিমালা অনুযায়ী, একজন জেলা প্রশাসক নির্দিষ্ট শর্তসাপেক্ষে এক বছরের জন্য সরকারি খাস জায়গা অস্থায়ী বন্দোবস্ত দিতে পারেন। তবে দীর্ঘমেয়াদি (৫ বছর বা তার বেশি) ভাড়া বা ইজারা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন ছাড়া দেওয়া যায় না। এ প্রসঙ্গে প্রশাসনের শীর্ষ এক কর্মকর্তা বলেন, ‘একজন ডিসি সরকারি খাস জায়গা এভাবে দীর্ঘমেয়াদি বন্দোবস্তি দেওয়ার নজির নেই। এর কোনো আইনগত ভিত্তি নেই।’
এর আগে গত বছরের ১১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের পরীর পাহাড়ে যাতায়াতের দুর্ভোগ কমাতে সড়কের ধারে ২৩ শতক জায়গায় গড়ে ওঠা অবৈধ দখলদারদের স্থাপনা ভেঙে দিয়েছিলেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক। উচ্ছেদের পর সেখানে জনস্বার্থে প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ডিসি রদবদল হলে সেই উদ্ধার করা জায়গা বর্তমানে আরেক দখলদারের হাতে চলে গেছে। অভিযোগ রয়েছে, জেলা প্রশাসনের যোগসাজশে বিএনপিপন্থী এক শীর্ষ রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীরা কয়েক কোটি টাকা মূল্যের সরকারি ওই জায়গা নিজেদের দখলে রাখেন। তাঁদের তত্ত্বাবধানে চুক্তিপত্রের মাধ্যমে দোকানপাট ও মার্কেট নির্মাণের পর ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. সাদিউর রহিম জাদিদ দাবি করেছেন, জায়গাটি একসনা বন্দোবস্তি বা এক বছরের জন্য ভাড়ায় দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, দুটি চুক্তি হয়েছে। নথি সূত্রে জানা গেছে, একটি চুক্তিত এক পক্ষে জেলা প্রশাসকের নাম রয়েছে। দ্বিতীয় পক্ষ হিসেবে নাম রয়েছে রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরীর। এই চুক্তিপত্রে সাক্ষী হিসেবে আছেন তাঁর বাবা মফজল আহমদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উচ্ছেদের আগে সেখানে আমাদের দোকান ছিল। সে সুবাদে নতুন করে ৫ বছরের জন্য জায়গাটি ভাড়া নিয়েছি। এ জন্য কিছু সালামির টাকাও দিয়েছি।’
ক্রাইম জোন ২৪