সাড়ে পাঁচ মাস ধরে বন্ধ সার কারখানা


গ্যাস সংকটে দীর্ঘ সাড়ে ৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে আশুগঞ্জ সার কারখানার উৎপাদন। প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ টন হিসেবে প্রায় ২ লাখ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে; যার বাজারমূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। এতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার দিকে ধাবিত হচ্ছে লাভজনক প্রতিষ্ঠানটি।
অন্যদিকে বেতনকাঠামো নিয়ে কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। গতকাল রোববার নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-সংযোগ ও ‘একই করপোরেশনে একই স্কেল বাস্তবায়ন’ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন শ্রমিক-কর্মচারীরা।
আশুগঞ্জ সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. বজলুর রশীদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি মো. আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু কাউছার, বাংলাদেশ কেমিক্যালস ওয়ার্কার ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, শ্রমিকনেতা মনিরুজ্জামান পাভেল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে শ্রমিক-কর্মচারীরা কারখানার অভ্যন্তরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে ইউনিয়নের নেতারা কারখানার মহাব্যবস্থাপকের (প্রশাসন) মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-সংযোগ ও একই করপোরেশনে একই স্কেল বাস্তবায়ন দাবিতে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়, একই করপোরেশনের আওতায় থাকা বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা ভিন্ন ভিন্ন বেতন স্কেলে আছেন, যা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য তৈরি করছে। পাশাপাশি গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে এবং জাতীয় স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
শ্রমিকনেতারা বলেন, চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত টানা ১৬২ দিন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ টন হিসেবে প্রায় ২ লাখ টন ইউরিয়া সার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা।
শ্রমিকনেতারা অভিযোগ করেন, একই করপোরেশনের আওতায় থাকা বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত শ্রমিক ও কর্মকর্তারা ভিন্ন ভিন্ন বেতন স্কেলে আছেন, ফলে দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্য চলছে। তাঁদের দাবি বিসিআইসির সব প্রতিষ্ঠান ও উপপ্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের জন্য সমান জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর করতে হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আবু কাউছার বলেন, ‘আমরা বারবার কারখানায় দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ ও শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন স্কেলের বিষয়ে ন্যায্য দাবির কথা জানিয়েছি, কিন্তু সমাধান হয়নি। তাই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে দাবির ন্যায্যতা তুলে ধরছি।’
সভাপতি মো. বজলুর রশীদ সতর্ক করে বলেন, ‘দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ ও শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন স্কেলের বিষয়টি যদি সমাধান না হয়, তাহলে আন্দোলনের পরিধি আরও বিস্তৃত করা হবে।’
ক্রাইম জোন ২৪