আসামি গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন


কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সব আসামিকে গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) দুপুরে নাগেশ্বরী প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরীর চাচা। এ সময় কিশোরীর বাবাসহ অন্য স্বজনেরাও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে কিশোরীর স্বজনেরা বলেন, গত ২৩ জুলাই নাগেশ্বরী ডিএম একাডেমি ফুটবল মাঠে হস্ত, বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় কিশোরীকে ডেকে নিয়ে চেতনানাশক খাইয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন রাব্বী মিয়া, জুলহাস মিয়া, শফিয়ার রহমান ও ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়া।
মামলার চার দিন হলেও আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই। আসামি রাব্বীকে পরিবার থানায় দিলে তাঁকে কোর্টে পাঠায় পুলিশ। সব আসামিকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান স্বজনেরা।
স্বজনেরা বলেন, ‘একজন ইউপি মেম্বার ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত। তারপরও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আমরা নানাভাবে শুনছি বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ন্যায়বিচার না পাওয়ার শঙ্কা করছি।’
ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরীকে গত ২৩ জুলাই মেলায় ডেকে এনে ঘোরাঘুরির পর গাগলা খামারটারীর একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন তার চাচাতো বোনের স্বামী রাব্বী মিয়া। পরদিন সকালে পৌরসভার হাসেম বাজার এলাকার ফারুক হোসেনের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে আবারও ধর্ষণ করেন।
একই দিন সন্ধ্যায় জুলহাস নামে একজনের হাতে তুলে দেন রাব্বী। এরপর তাকে রায়গঞ্জ বোর্ডের বাজারের পাশে এক বাড়িতে নিয়ে শফিয়ার ও মোতালেব মেম্বার রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। ভোরে বাড়ি থেকে বের করে দিলে নানার বাড়িতে যায় কিশোরী।
পাঁচ দিন বাড়িতে গ্রাম্য চিকিৎসকের চিকিৎসা নিয়ে বেশি অসুস্থ হলে ১ আগস্ট নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক।
এ ঘটনায় ৩ আগস্ট উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নের গাগলা খামারটারী এলাকার আবু তালেবের ছেলে রাব্বী মিয়া, নাগেশ্বরী পৌরসভা এলাকার বাঁশেরতলের আনোয়ার হোসেনের ছেলে জুলহাস মিয়া, রায়গঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব সাপখাওয়া এলাকার মৃত বাদর উদ্দিন ওরফে ঢোলার ছেলে শফিয়ার রহমান ওরফে শফি কন্ট্রাক্টর এবং রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মোতালেব মিয়াকে আসামি করে মামলা করেন কিশোরীর বাবা।
তবে মামলার প্রাথমিক তদন্তে এজাহারে দেওয়া বর্ণনার সঙ্গে কিছুটা অসংগতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও নাগেশ্বরী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রহিম বলেন, প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাঁদের অবস্থান শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম বলেন, ‘আমরা মামলা নিয়েছি। প্রধান আসামি রাব্বী জেলে আছে। কোনো আসামি ছাড় পাবে না। সব আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তৎপর রয়েছে। তবে এজাহারে বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে প্রাথমিক তদন্তে কিছু অসংগতি পাওয়া গেছে। বিষয়টি এখনো তদন্তাধীন। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানা যাবে।’