বেরোবির সাবেক ভিসি কলিমুল্লাহসহ ৫ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য (ভিসি) নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, সাবেক আরও এক ভিসি ও প্রকল্প পরিচালক কে এম নূর-উন-নবীসহ পাঁচজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।
অন্য যাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন—বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সদস্যসচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদার মো. আ. সালাম বাচ্চু এবং এম এম হাবিবুর রহমান।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা সহকারী পরিচালক তানজির আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পাঁচজনের দেশত্যাকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নকাজের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কলিমউল্লাহসহ পাঁচজনকে আসামি করে গত ১৮ জুন দুর্নীতির মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদিত ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) উপেক্ষা করে প্রকল্পের নকশা পরিবর্তন করেন।
এ ছাড়া ৩০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের চুক্তি শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট বিভাগের অনুমোদন ছাড়া সম্পাদন করা হয়। ঠিকাদারের বিল থেকে কাটা নিরাপত্তা জামানতের অর্থ এফডিআর করে ব্যাংকে জমা রেখে তা লিয়েনে দিয়ে ঠিকাদারকে ব্যাংকঋণ নেওয়ার অনুমতি দেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। এই প্রক্রিয়ায় সরকারের প্রায় ৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলায় এজাহারে আরও বলা হয়, ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে অগ্রিম টাকা দেওয়ার কোনো নিয়ম না থাকলেও ‘আর্থিক সহায়তা’র অজুহাতে ব্যাংক গ্যারান্টির মাধ্যমে অগ্রিম বিল দেওয়া হয়। তবে সেই বিল পরিশোধের আগেই ব্যাংক গ্যারান্টির ছাড় করে দেওয়া হয়, যা ছিল সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূত। এ ছাড়া প্রথম পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রদত্ত নকশা বাতিল করে সরকারি ক্রয় বিধিমালা লঙ্ঘন করে দ্বিতীয় একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ দরপত্রে অস্বাভাবিক মূল্য প্রস্তাব (ফ্রন্ট লোডিং) থাকা সত্ত্বেও যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদনে বলা হয়েছে, ড. কলিমুল্লাহসহ অন্যদের বিরুদ্ধে আনীত এসব অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তকালীন দুদক জানতে পেরেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা যেকোনো সময় দেশত্যাগ করে বিদেশে চলে যেতে পারেন। তাঁরা বিদেশে চলে গেলে মামলা তদন্তে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। এ কারণে তাঁদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, দুদকের মামলায় ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে আজ মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে হাজির করা হয়েছে।