শিরোনাম

অন্তর্বর্তী সরকার বিপরীত পথে হাঁটছে: বজলুর রশিদ

অন্তর্বর্তী সরকার বিপরীত পথে হাঁটছে: বজলুর রশিদ

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেছেন, ‘শহীদের রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায়। এসেছে, সেই অন্তর্বর্তী সরকার আজ বিপরীত পথে হাঁটছে।’

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বাসদ আয়োজিত এক গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বজলুর রশিদ আরও বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে—সরকারি গেজেটে বলা হয়েছে ৮৪০ জন, পরে তা সংশোধন করে ৮৩৬ জন বলা হয়, আবার জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন বলছে ৮২০ জন। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন বলছে, ১ হাজার ৪০০ জন শহীদ হয়েছেন। সরকারের কাছে জানতে চাই, এত তারতম্য কেন?’

বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘ড. ইউনূসের “তিন শূন্য তত্ত্ব”-এর একটি হলো বেকারত্ব থেকে মুক্তি। কিন্তু যে ২৬টি পাটকল এবং ৬টি চিনিকল ফ্যাসিস্ট সরকার বন্ধ করেছিল, তা এখনো চালু হয়নি। বরং আশুলিয়া, গাজীপুরসহ শিল্পাঞ্চলে নতুন করে ১১৭টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, বেকার হয়েছে লাখেরও বেশি শ্রমিক।’

তিনি বলেন, ‘সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র তুলে দেওয়ার প্রস্তাব এসেছে। তাহলে বৈষম্যহীন রাষ্ট্র কীভাবে প্রতিষ্ঠা পাবে? ধর্মনিরপেক্ষতা রাষ্ট্রের মূলনীতিতে না থাকলে, সবাই নিরাপদে নিজ ধর্ম পালন করবে কীভাবে?’

মুক্তিযুদ্ধকে ছাপিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা এখনো ঘটেনি উল্লেখ করে এই বাম নেতা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভেঙে, ৩২ নম্বর ভেঙে, সংবিধান ছুড়ে ফেলে দিয়ে ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা চলছে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে বড় কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা এদেশে ঘটেনি। ৯০-এর গণআন্দোলন হোক, ২০২৪-এর অভ্যুত্থান—সবই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের মর্যাদা অনন্য।’

তিনি বলেন, ‘১১টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নযোগ্য হলেও সরকার তা করছে না। ঐক্যমত কমিশনে ৩০টি রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা করে ৬২টি সুপারিশে একমত হলেও কোনো বাস্তবায়ন নেই। সংবিধানের চার মূলনীতি—গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, জাতীয়তাবাদ—বহাল রেখেই সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার যুক্ত করা হোক, এতে আপত্তি নেই। কিন্তু চার মূলনীতি বাদ দিয়ে কিছু চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। বিভিন্ন মত ও আদর্শ নিয়েই রাজনীতি হবে, জনগণের ম্যান্ডেটই নির্ধারণ করবে কে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসবে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, সদস্য জুলফিকার আলী প্রমুখ। এ ছাড়াও শ্রমিক ফ্রন্ট ও ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button