স্বাধীনতাযুদ্ধে পরাজিতরাই সংবিধান পুরোটা বাদ দিতে চায়: বজলুর রশীদ


একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধে পরাজিতরাই একাত্তরের সংবিধান পুরোটা বাদ দিতে চায় বা পরিবর্তন করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। তিনি বলেন, ৭১’এর সংবিধান রচিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও সার্বভৌমত্বকে ঘিরে। সংবিধানকে সংস্কার করা যাবে কিন্তু সংবিধান পুরোটা বাদ দিতে হবে এটা কোনো কথা নয়। যারা ৭১ ’এর স্বাধীনতাযুদ্ধে পরাজিত গ্লানি ভুলতে পারেনি তারাই ৭১ ’এর সংবিধান পুরোটা বাদ দিতে চায়।
‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: প্রত্যয় ও প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। আজ সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরাম এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, জুলাইয়ে প্রত্যাশা ছিল মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার। এই অভ্যুথান অসাম্প্রদায়িক শোষণমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে কেন্দ্রীয় প্রত্যয় ছিল। সরকার যে একবছরে আমূল পরিবর্তন করে ফেলতে পারবে তা নয়, কিন্তু সূচনাটা করা তো উচিত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কাজ ছিল সংস্কার, বিচার প্রক্রিয়া ও সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যবস্থা করা। এই তিনটার একটাও করতে পারেনি তারা।
তিনি বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে যে পাহাড়সম বৈষম্য সেটি দূর করতে পারেনি। সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, সেখানে বাস্তবায়ন তো দুরে থাক, মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল সেখানেও তো কৃষির উন্নয়নের জন্য কোন কমিশন গঠন করেনি।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জ্যেষ্ঠ অ্যাড. সুব্রত চৌধুরী। গণফোরামের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধুর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন— বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মিসেস তানিয়া রব, ভাষানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, গণফোরামের সভাপতি পরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. এস এম আলতাফ হোসেন, অ্যাড. এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ, অ্যাড. সেলিম আকবর, অ্যাড. সুরাইয়া বেগম ও গণফোরাম এর সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ
গণফোরামের সভাপতি পরিষদ সদস্য অ্যাড. সুরাইয়া বেগম বলেন, ‘আজকে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি, যার অবদান জুলাই গণঅভ্যুত্থান। দেশের কল্যাণে, দেশ ও জনতার স্বার্থে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই।’
ভাষানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ৭১ ’এ একটা প্রত্যয় ছিল। আমাদের বলা হলো, তোমরা অস্ত্র জমা দিয়ে যার যার কর্মস্থলে চলে যাও। তখন বুঝেছিলাম ৭১ ’এর স্বাধীনতা বেহাত হয়ে গেল। এই গণঅভ্যুত্থানটাও বেহাত হয়ে যাবে দখলদারিত্বের হাতে। এর ভবিষ্যতও যে কি হবে তারও ভালো নিশ্চয়তা নেই।
তিনি বলেন, ‘দুইটি বড় দল, একটি নতুন দল, মোট তিনটি দল মিলে প্রস্তুত করেছে জুলাই সনদ। আগামীকালকে ঘোষণা করা হবে। আমাদেরকে খসড়া কেউ এখনো পাঠাইনি। অথচ আমরাও জুলাই সনদের একটি খসড়া তৈরি করেছিলাম। কিন্তু আমরা কিছুই জানিনা।’