শিরোনাম

স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার বাস্তবায়নে কমিশন গঠনের দাবি

স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার বাস্তবায়নে কমিশন গঠনের দাবি

স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স ও একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্যের অংশীজনেরা। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেশের স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারপ্রক্রিয়ার পরিকল্পনাকে দ্রুত বাস্তবায়ন করা উচিত বলেও তাঁরা জোর দেন।

গতকাল রোববার (৩ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি), ইউনিসেফ ও ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ ফোরামের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ দাবি ওঠে।

বক্তারা বলেন, অন্তবর্তী সরকারের উদ্যোগে স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ। তবে পরবর্তী ধাপে এর সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের দিকেই মনোযোগ দিতে হবে। প্রস্তাবিত টাস্কফোর্সটি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে কাজ করবে, আর কমিশনটি হবে কারিগরি ও পরামর্শভিত্তিক।

পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশন (এইচএসআরসি) একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি গড়ে দিলেও তার সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় তা উপেক্ষিত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সংস্কারের যে গতি তৈরি হয়েছে, তা যেন হারিয়ে না যায়। এখন দরকার বাস্তবভিত্তিক অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং দ্রুত পদক্ষেপ।

তিনে বলেন, ‘জাতীয় রূপান্তরের জন্য উদ্ভাবিত জুলাই চার্টারে স্বাস্থ্য খাত সংস্কারকে অন্তর্ভুক্ত করাটা এখন সময়ের দাবি। কমিশন পথ দেখিয়েছে, এখন প্রয়োজন পদক্ষেপের। তিনি দুটি সমান্তরাল উদ্যোগের কথা বলেন—একটি হচ্ছে, জরুরি অগ্রাধিকারমূলক পদক্ষেপ, অপরটি হচ্ছে, জনসম্পৃক্ততা ও রাজনৈতিক সমর্থন অর্জনের জন্য কার্যকর অ্যাডভোকেসি।

পথিকৃত ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও কমিশনের সদস্য অধ্যাপক লিয়াকত আলী বলেন, প্রস্তাবিত টাস্কফোর্সটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের নেতৃত্বে থাকা উচিত এবং কমিশনটিকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তিনি পর্যায়ক্রমে সংস্কার বাস্তবায়নের পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও কমিশনের আরও এক সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ আকরাম হোসেন আক্ষেপ করে বলেন, জাতীয় সংলাপ কমিশনের খসড়ায় স্বাস্থ্য খাতের কোনো উল্লেখ নেই, যা হতাশাজনক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আবদুল হামিদ বলেন, ওষুধের দাম সাধারণ মানুষের নাগালে আনতে একটি স্বাধীন কমিটি গঠন করা দরকার, যারা বাজারভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করবে।

বক্তারা বলেন, তিন মাস আগে কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার আর বিলম্ব করার সুযোগ নেই। প্রয়োজন এখন একটি সুসংহত, বহুপক্ষীয়, দায়বদ্ধ প্রক্রিয়া, যাতে জনস্বাস্থ্য হয়ে ওঠে নীতি-আলোচনার কেন্দ্রে এবং তা বাস্তবায়নের পথে দৃঢ়ভাবে এগিয়ে যায়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক এম এ ফয়েজ, মো. মোস্তাক হোসেন, আমিনুল হাসান, ফিদা মেহরান, জাকির হোসেন, সৈয়দ রুবায়েত ও আবুল কালাম আজাদ।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button