সামরিক ড্রোন কেনায় কমিশন বাণিজ্য, ইউক্রেনে এমপি ও কর্মকর্তা গ্রেপ্তার


ড্রোন ও ইলেকট্রনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম কেনায় ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগে ইউক্রেনের এক সংসদ সদস্যসহ একাধিক সরকারি কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা। রাষ্ট্রীয় চুক্তিতে পণ্যের দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে ঘুষ গ্রহণের এ চক্রটি গড়ে তোলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থাগুলো।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘দুর্নীতির বিষয়ে কোনো ধরনের সহনশীলতা দেখানো হবে না।’ এ সময় দুর্নীতি উদ্ঘাটনে জড়িত সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ জানান প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
এদিকে দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মাঝেই সরকারের এক বিল নিয়ে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে তীব্র জনরোষ। ওই বিলে দুর্নীতিবিরোধী দুটি প্রধান সংস্থা—ন্যাশনাল অ্যান্টি করাপশন ব্যুরো (এনএবিইউ) ও স্পেশাল অ্যান্টি করাপশন প্রসিকিউটর অফিস (এসএপি)-এর স্বাধীনতা খর্ব করে সমস্ত ক্ষমতা রাষ্ট্রীয় পাবলিক প্রসিকিউটরের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।
সরকার দাবি করে, এসব সংস্থাকে রুশ প্রভাবমুক্ত করতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু বিশ্লেষক ও সাধারণ নাগরিকরা একে দুর্নীতি দমনের অগ্রগতির বিরুদ্ধে একটি বাধা হিসেবে দেখেন। ফলে শুরু হয় দেশব্যাপী বিক্ষোভ, যা ২০২২ সালে যুদ্ধ শুরুর পর সবচেয়ে বড় সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।
বিক্ষোভের চাপে মাত্র ৯ দিনের মাথায় জেলেনস্কি নিজেই সংসদে সংশোধিত একটি বিল উত্থাপন করেন, যেখানে সংস্থা দুটির স্বাধীনতা পুনর্বহাল করা হয়। প্রেসিডেন্টের এই পদক্ষেপ বেশ প্রশংসিত হয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারাও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ইউরোপীয় কমিশন ও আইএমএফের শর্তের অংশ হিসেবে ২০২৪ সালে ইউক্রেনে প্রতিষ্ঠিত হয় ওই দুই সংস্থা। এই সংস্থাগুলো ২০২২ সালের পর একাধিক উচ্চপর্যায়ের দুর্নীতির মামলায় তদন্ত করেছে। ২০২৩ সালে ইউক্রেনের সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান ভসেভলোদ নিয়াজিয়েভকে তিন মিলিয়ন ডলারের ঘুষ মামলায় গ্রেপ্তার করে এনএবিইউ।