জুমার দিনের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও আমল


জুমার নামাজ, যা ‘শুক্রবারের নামাজ’ নামে পরিচিত, ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত। ‘জুমুআহ’ শব্দের অর্থ একত্রিত হওয়া বা কাতারবদ্ধ হওয়া। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানরা একত্রিত হয়ে জামাতের সঙ্গে জোহরের নামাজের পরিবর্তে এটি আদায় করেন, তাই একে জুমার নামাজ বলা হয়। পবিত্র কুরআনে ‘জুমুআ’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা রয়েছে।
জুমার দিনের গুরুত্ব
আল্লাহ তাআলা এই দিনে জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছেন। হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-কে এই দিনে জান্নাতে একত্র করা হয়েছিল। মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে এই দিনে মসজিদে একত্রিত হয়। প্রথম হিজরিতে রাসুলুল্লাহ (সা.) মদিনায় পৌঁছে বনি সালেম গোত্রের উপত্যকায় প্রথম জুমার নামাজ আদায় করেন।
জুমার দিনে করণীয় আমলসমূহ
- গোসল করা।
- ফজরের ফরজ নামাজে সুরা সাজদা ও সুরা দাহর/ইনসান তিলাওয়াত করা।
- উত্তম পোশাক পরা ও সুগন্ধি ব্যবহার করা।
- আগেভাগে মসজিদে যাওয়া।
- সুরা কাহফ তিলাওয়াত করা।
- কমপক্ষে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ আদায় করা।
- ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসা এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা।
- খুতবা চলাকালে কথা না বলা।
- দুই খুতবার মাঝে ও অন্যান্য সময়ে বেশি বেশি দোয়া করা।
- রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করা।
জুমার নামাজের নিয়ম
জুমার নামাজ দুই রাকাত ফরজ। এর আগে চার রাকাত কাবলাল জুমা এবং পরে চার রাকাত বাদাল জুমা (সুন্নত) আদায় করতে হয়। এটি জামাতের সঙ্গে আদায় করা আবশ্যিক এবং একা পড়া যায় না। অসুস্থ ব্যক্তি বা মুসাফিরদের জন্য যোহরের নামাজ আদায় করা জায়েজ।
জুমার দুই রাকাত ফরজ নামাজ ও ইমামের খুতবা জোহরের চার রাকাত ফরজ নামাজের স্থলাভিষিক্ত। জুমার খুতবা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে ইমাম সমসাময়িক বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেন। দুইটি খুতবা দেওয়া হয় এবং খতিব (যিনি খুতবা দেন) কোরআন-হাদিসের আলোকে আলোচনা করেন।
জুমার নামাজ না পড়ার শাস্তি
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা বিনা ওজরে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। এটি কবিরা গুনাহ। তবে ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্তবয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি ব্যতীত অন্যদের জন্য জুমা ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ।