ফ্যাসিবাদের উত্থান ঠেকাতে নারীদের সজাগ থাকতে হবে: তারেক রহমান


আগামী দিনের গণতান্ত্রিক ও মানবিক দেশ গঠনের যাত্রায় নারী সমাজের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণ ও সমর্থন প্রত্যাশা করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা যাতে আর মাথাচাড়া দিতে না পারে, সে জন্য তাঁদের সতর্ক ও সজাগ থাকারও আহ্বান জানান তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডে শহীদ আবু সাঈদ আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান। ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান’ শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
সমাবেশে নারীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ অবসানের পর মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ সামনে এসেছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্ক্ষিত দেশ গঠনের জন্য আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী দিনে নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার, তেমন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যাতে আর কোনোভাবে কোনো দিন ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে বিষয়ে বিশেষ করে নারী সমাজকে অত্যন্ত সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে। সতর্ক ও সজাগ থাকতে আমি সমগ্র বাংলাদেশের মা-বোনদের আহ্বান জানাই।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীদের অবদান উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিগত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে অনেক মা তাঁর প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আমার মা তাঁর এক সন্তানকে হারিয়েছেন। বহু স্ত্রী তাঁর প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছেন। বোন তাঁর ভাইকে হারিয়েছেন। অনেক মা-বোন নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। অনেক পরিবারের পারিবারিক বন্ধন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
‘নারীদের মূল স্রোতের বাইরে রেখে কখনোই দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই নারীদের জন্য বিএনপি আগামী দিনের পরিকল্পনা সাজিয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে জনগণের ভোটে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের প্রধান নারী সদস্যের নামে ফ্যামিলি কার্ড ইস্যু করব। প্রান্তিক পরিবারের জন্য প্রতি মাসে খাদ্য ও আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’
গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে আবারও আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তাঁদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমরা যেন ঐক্যবদ্ধ থাকি।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমানসহ শহীদ ও গুম-খুনের শিকার পরিবারের সদস্যরা।