‘মামলা করি কী হইবে, পুলিশ থাকিয়াও হামার জীবনে নিরাপত্তা নাই’


‘বাবা মামলা করি কি হইবে, পুলিশ থাকিয়াও হামার জীবনে নিরাপত্তা নাই, আর মামলা করি আরও বিপদোত (বিপদ) পরমো। বিভিন্ন জায়গা থাকি খবর পাওছি, মামলা করলে নাকি হামাকগুলাক ভিটা ছাড়া করবে’, চোখে–মুখে আতঙ্কের ছাপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন রংপুরের গঙ্গাচড়া আলদাতপুর ছয়আনি হিন্দু পল্লীর কোনিকা রানী (৪৮)।
এর আগে গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে রংপুরের গঙ্গাচড়া বেতগাড়ি ইউনিয়নে এক কিশোরকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় পাশের এলাকার লোকজন এসে ওই কিশোরের বাড়ি মনে করে অন্য আরেকজনের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পরে আরেক দফা হিন্দুপল্লিতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।

এতে ১৮ টির মতো পরিবারের ঘরবাড়ি তছনছ হয়। আতঙ্কে ৫০ টির মতো পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। হামলা ঠেকাতে গিয়ে এক পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়।
জানতে চাইলে রবীন্দ্রনাথ রায় (৫০) নামের আরেক ভুক্তভোগী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন এসে আমাদের মামলা করতে বলতেছে, এখন যদি মামলা করি দোষী নির্দোষী সবাই ফাঁসবে। তখন এই মামলা দিয়ে সবাই ব্যবসা করবে। এই বিষয়টা নিয়ে পুলিশ মামলা নিজে থেকে করলে কি হয়,? রঞ্জন রায়ের সময় যদি পুলিশ বাদী হয়া মামলা করিবার পারে, তাহলে হামার বেলা ক্যান বাদী হয়া মামলা করতে পায় না, . ?
এদিকে আটক কিশোরকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল রোববার আদালতের মাধ্যমে কিশোর পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত (সোমবার) ভঙচুরের ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল এমরান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যদি তাদের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ করে তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিব।’