শেরপুরে চেতনানাশক প্রয়োগে চুরি, একই পরিবারের চারজন হাসপাতালে


বগুড়ার শেরপুরে গভীর রাতে একটি বাড়িতে চেতনানাশক প্রয়োগ করে চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে ভুক্তভোগী পরিবারের চারজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (২৬ জুলাই) দিবাগত রাতে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আমিনপুর গ্রামের ইউসুফ আলীর বাড়িতে এই চুরির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাত ৯টার দিকে ইউসুফ আলীর পরিবারের সদস্যরা খাবার শেষ করে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা জানালার গ্রিল কেটে ঘরে প্রবেশ করে। ঘরে ঢুকে তারা সবাইকে চেতনানাশক দিয়ে অচেতন করে ফেলে এবং ওয়ার্ডরোব ভেঙে ১২ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
আজ রোববার সকালে ওই বাড়িতে কারোর কোনো শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা খোঁজ নিতে যান। অনেক ডাকাডাকির পরও সাড়া না পেয়ে তাঁরা ঘরে ঢুকে দেখেন, ইউসুফ আলী, তাঁর স্ত্রী শাপলা বেগম (৩৮), বড় মেয়ে রুম্মান বেগম (২২) এবং রুম্মানের ১৫ দিনের শিশুসন্তান সবাই অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন।
প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজিদ হাসান বলেন, ‘চেতনানাশক জাতীয় কিছু একটি প্রয়োগ করা হয়েছে। তবে ঠিক কী ধরনের পদার্থ প্রয়োগ করা হয়েছে, তা পরীক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব নয়। এখনো পর্যন্ত ইউসুফ আলী ও তাঁর স্ত্রী শাপলা বেগমের জ্ঞান পুরোপুরি ফেরেনি। চিকিৎসা চলছে। রুম্মান বেগম তুলনামূলক সুস্থ হলেও তাঁর ১৫ দিনের শিশুসন্তানের অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বগুড়ার মিশন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
ইউসুফ আলীর ছেলে তাঞ্জিল সরকার জানান, তিনি কলেজে পড়াশোনা করেন এবং শেরপুর শহরে থাকেন। সকালে ঘটনার খবর পেয়ে বাড়ি এসে পরিবারের সবাইকে অচেতন অবস্থায় পান এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।
তাঞ্জিল সরকার ও তাঁর মামা ফিরোজ আহমেদ জানান, চুরির ঘটনায় প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শিগগিরই তাঁরা থানায় লিখিত অভিযোগ করবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর সার্কেল) সজীব শাহরিন বলেন, ‘চেতনানাশক প্রয়োগ করে এই ধরনের চুরি শেরপুরে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘটেনি। আমরা গুরুত্বসহকারে বিষয়টি তদন্ত করছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’