গুলশানে চাঁদাবাজির মামলায় চারজন ৭ দিনের রিমান্ডে


রাজধানীর গুলশানে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির ঘটনায় মামলায় চারজনকে ৭ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার (২৭ জুলাই) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জিয়াদুর রহমান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
যাদের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে তাঁরা হলেন—ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, মো. সাকাদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব ও আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান (রিয়াদ)। তাঁদের মধ্যে ইব্রাহীম হোসেন মুন্নাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক, মো. সাকাদাউন সিয়াম ও সাদমান সাদাবকে সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আর রিয়াদকে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ থেকে দেওয়া পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার অন্যজনের বয়স ১৩ বছর। তাকে শিশু আদালতে নেওয়া হয়। পরে তদন্ত কর্মকর্তা তাকে আটক রাখার আবেদন করেন।
বিকেলে তাদেরকে আদালতে হাজির করে গুলশান থানা-পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পুলিশ পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত প্রত্যেকের ৭ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শাম্মী আহমেদের বাসায় ৫০ লাখ টাকা চাঁদার দাবি করতে গিয়ে হাতেনাতে আটক হন পাঁচজন। পরে গতকাল শনিবার মধ্যরাতে গুলশান থানায় মামলা করেন শাম্মী আহমেদের স্বামী সিদ্দিক আবু জাফর। মামলায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলার এজাহারে সিদ্দিক আবু জাফর অভিযোগ করেন, চলতি মাসের ১৭ জুলাই সকালে মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদ এবং কাজী গৌরব ওরফে অপু তাঁকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধমকি দিয়ে গুলশান ২ নম্বরের ৮৩ নম্বর রোডের বাসায় জোর করে ঢুকেন এবং তাঁর কাছে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করেন। এতে তিনি ওই টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার করানোর হুমকি দিয়ে টাকা দিতে চাপ দিতে থাকেন।
একপর্যায়ে তিনি বাধ্য হয়ে নিজের কাছে থাকা নগদ পাঁচ লাখ টাকা এবং তাঁর ভাইয়ের কাছ থেকে আরও নগদ পাঁচ লাখ টাকা তাঁদের দুজনকে দেন। এই ঘটনার দুদিন পর ১৯ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে রিয়াদ ও অপু আবারও বাসায় গিয়ে তাঁর ফ্ল্যাটের দরজায় সজোরে ধাক্কা মারে। গুলশান থানা পুলিশকে ফোনে বিষয়টি জানালে তাঁরা সেখান থেকে চলে যায়।
এজাহারে আরও বলা হয়, এ ঘটনার পর গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মো. আব্দুর রাজ্জাক ওরফে রিয়াদের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন তাঁর বাসার সামনে এসে তাঁকে খুঁজতে থাকে। তিনি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান মোবাইল ফোনে তাঁকে বিষয়টি জানায়। তাঁরা পুনরায় তাঁদের দাবি করা বাকি ৪০ লাখ টাকা দিতে বলে। টাকা না দিলে পুলিশে ধরিয়ে দেবে বলে হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করলে গুলশান থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে রিয়াদসহ পাঁচজনকে আটক করে। তবে এ সময় অপু পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: