শিরোনাম

আবার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

আবার নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে গোলাগুলি, আতঙ্কে স্থানীয়রা

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি-সংলগ্ন মিয়ানমার সীমান্তের ৩৮ থেকে ৫০ নম্বর পিলার এলাকাজুড়ে গোলাগুলির শব্দে কেঁপে ওঠে বাংলাদেশ সীমান্তের বিস্তীর্ণ এলাকা। ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা। শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গোলাগুলির বিকট শব্দ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, তিনি লেবুর ব্যবসা করেন। সকাল ৬টায় তিনি সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান। তখন বাহিরমাঠসহ আশপাশের লোকজন নিরাপদে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন। তিনি নিজেও সীমান্তবর্তী লেবুবাগান থেকে ফিরে এসেছেন।

৪৪ নম্বর পিলার সীমান্তের বাসিন্দা সৈয়দ হোসাইন বলেন, সীমান্তের ওপারে পুরানমাইজ্জা নামক মিয়ানমারের চৌকি থেকে বেশ কিছু ভারী অস্ত্রের গোলার শব্দ তাঁরা শুনেছেন। বিদ্রোহী আরাকান আর্মির যোদ্ধারা গুলি চালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় কেউ কেউ বলছেন, মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আধিপত্য বিস্তার করতে আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে গোলাগুলি, স্থলমাইন পুঁতে রাখাসহ নানা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তিন দিন ধরে সীমান্তের ২৮টি চৌকিতে আরাকান আর্মি লাল পতাকা টাঙিয়েছে। জান্তা বাহিনীকে ভয় দেখাতে এই পতাকা টাঙানো হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসব ঘটনায় বাংলাদেশ সীমান্তে বসবাসকারীরা আতঙ্কে রয়েছে।

অনেকের মতে, বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী নেই। রয়েছে বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তাদের সঙ্গে আরেক বিদ্রোহী আরসা বাহিনী ও আরএসওর সদস্যদের গোলাগুলি হতে পারে।

অপর একটি সূত্রের দাবি, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে তাদের প্রতিপক্ষ বেশ কয়েকটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপ। এই গ্রুপগুলোকে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী নানাভাবে সহযোগিতা দিচ্ছে। ফলে আবার সংঘাতের মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে।

সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধীন চাকঢালা সীমান্ত পিলার এলাকার ওপারে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির ঘটনার খবর আমরা শুনতে পেয়েছি। বেলা ১১টায় একটি গুলির খোসা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে এসে পড়েছে। এতে ওই এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।’

ইউএনও জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও সীমান্তে দায়িত্বে থাকা বিজিবি সদস্যরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। নিরাপত্তা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিষয়টি জানতে ১১ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল এস কে এম কফিল উদ্দিন কায়েস এবং ৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল খায়রুল আলমের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁরা ফোন ধরেননি।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক (ডিসি) শামীম আরা রিনি বলেন, নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা সীমান্তের ওপার থেকে গুলির খোসা বাংলাদেশ অংশে পড়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে জানিয়েছেন। তবে মিয়ানমারে কী কারণে গুলির ঘটনা ঘটেছে, তিনি তা নিশ্চিত হতে পারেননি।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button