ইবি শিক্ষার্থীর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও দুর্নীতির শ্বেতপত্রের দাবিতে বিক্ষোভ


ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিগত প্রশাসনের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা প্রাঙ্গণ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বক্তারা বলেন, ‘সাজিদ আমাদের ভাই। আমাদের জানা উচিত, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি হত্যা। এটা যদি হত্যাকাণ্ড হয়, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটা শিক্ষার্থী হুমকির মুখে পড়বে। আমার ভাইয়ের মৃত্যু যেভাবেই হোক না কেন, অতি দ্রুত তদন্ত করে তা আমাদের সামনে তুলে ধরতে হবে। এখনো আমরা প্রশাসনের পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। কালক্ষেপণ না করে অতি দ্রুত সাজিদ হত্যার বিচার করতে হবে, নইলে ইবির বুকে আবারও জুলাই নেমে আসবে।’
শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পতনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রসংগঠনগুলো অনেক দাবিদাওয়া দিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ আমরা দেখতে পাই নাই। ছাত্রশিবির ১১০ দফা দাবি দিয়েছে। স্টাডি করে দাবিগুলো দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন সেটা কতটুকু স্টাডি করে, আর কতটুকু ইমপ্লিমেন্ট করে—তা আমাদের জানা নাই। যে গদিতে বসেছে, সে গদি থেকে যেন নড়াচড়া না করা লাগে, সে রকম পদক্ষেপ নিয়েই প্রশাসন হাঁটছেন। প্রশাসনকে আমরা যতটা গতিশীল দেখতে চেয়েছিলাম, তার ন্যূনতম গতি আমরা দেখি নাই।’

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহমেদ বলেন, ‘তদন্ত কমিটির কাছে আমাদের দাবি সাজিদের এই রহস্যজনক মৃত্যুর সঠিক তদন্ত করা হোক। আর এটা যদি হত্যা হয়, তাহলে দোষীদের অতি দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া অবধি আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাব, তবে আমাদের আন্দোলন হবে ন্যায়ভিত্তিক ও যৌক্তিক।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘আমাদের যথাসময়েই সুষ্ঠু তদন্ত চাই এবং যদি হত্যাকাণ্ড হয়, তাহলে দ্রুত জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রশাসনকে বলছি, সময় থাকতে সঠিক পথে ফিরে আসুন। অন্যথায়, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে দুর্বার গণ-আন্দোলনের পথে হাঁটব। তখন আর আপনাদের কোনো কিছু করার থাকবে না। আমরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলনকে চূড়ান্ত রূপ দিয়ে সার্বিকভাবে প্রশাসনকে জবাবদিহির আওতায় আনব। এটি শুধু একটি মৃত্যুর বিচার নয়—এটি ন্যায়ের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সোচ্চার অবস্থান।’
শ্বেতপত্রের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির শ্বেতপত্র আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি। গত ১৫ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কী পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে, তা শিক্ষার্থীরা জানতে চায়।’