সাবেক এমপিদের শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা গাড়ি বিক্রির উপায় খুঁজছে এনবিআর


সাবেক সংসদ সদস্যদের নামে শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা গাড়িগুলো নিলামের পরিবর্তে বিক্রির জন্য নতুন কৌশল অবলম্বন করবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় এসব বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছিলেন। তবে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছরের ৬ আগস্ট সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এনবিআর শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করে। সাবেক ওই সংসদ সদস্যদের নামে আমদানি করা ৪২টি গাড়ির মধ্যে ২৪টি গত ফেব্রুয়ারিতে প্রথম দফায় নিলামে তোলা হয়েছিল। কিন্তু আগ্রহী ক্রেতারা গাড়িপ্রতি সর্বোচ্চ ১ লাখ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ টাকা দর প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবিত দর বাজারমূল্যের (প্রতিটি ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা) তুলনায় অনেক কম ছিল। এ কারণে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ গাড়িগুলো ছাড় করেনি।
এ নিয়ে এনবিআর-এর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা গাড়িগুলো নিলামে দিয়েছিলাম, কিন্তু আশানুরূপ ফল পাইনি। এখন আমরা বিকল্প পন্থা বিবেচনা করছি। কিছু সরকারি সংস্থা ৬০ শতাংশ মূল্যে গাড়ি কেনার প্রস্তাব দিয়েছে। তবে আমরা পানির দরে বিক্রি করতে চাই না। উপযুক্ত মূল্য না পেলে সরকারের উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করে গাড়িগুলোর সর্বোত্তম ব্যবহার নির্ধারণ করা হবে। বছরের পর বছর গাড়ি ফেলে রেখে স্ক্র্যাপ করার পক্ষে আমরা নই। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান।
বন্দরে কন্টেইনার জট নিরসন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বন্দরে প্রায় ছয় হাজার কনটেইনার দীর্ঘদিন ধরে পড়ে আছে। জট নিরসনের জন্য এগুলো নিলামে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি নিলাম হয়েছে। প্রথম নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতার কাছে কনটেইনারগুলো হস্তান্তর করা হবে। সময় নষ্ট এড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’

চট্টগ্রামে তিনটি আইকনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা চট্টগ্রামে তিনটি আইকনিক ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা করেছি। এর মধ্যে একটি হবে কাস্টম হাউজ, যা অত্যন্ত নান্দনিক হবে। এর নকশা চূড়ান্ত হয়েছে, তবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এটি আলোচনা করা হবে। এ ছাড়া কাস্টমস একাডেমি ও আগ্রাবাদে একটি কর ভবন নির্মাণ করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘কাস্টম হাউজ নির্মাণের জন্য পুরোনো ভবন ভাঙতে হবে, তাই কাস্টম হাউজের অস্থায়ী স্থান নির্ধারণে আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাস্টম হাউজ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে স্থানান্তরিত হবে, যা সবার জন্য সুবিধাজনক হবে।’
এর আগে এনবিআর চেয়ারম্যান সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় সংগঠনের সভাপতি এসএম সাইফুল আলমসহ নেতারা আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমের বিভিন্ন সমস্যা তুলে ধরেন।