শিরোনাম

বিভিন্ন সময় আমাদের মূর্খ বলা হয়েছে, কিন্তু আমি দস্তখত করতে জানি: চরমোনাই পীর

বিভিন্ন সময় আমাদের মূর্খ বলা হয়েছে, কিন্তু আমি দস্তখত করতে জানি: চরমোনাই পীর

বাংলাদেশের জনগণ যে পরিবর্তনের আশায় আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, সেই পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা করলে তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

সংগঠনটির নেতারা বলেছেন, যারা নতুন করে ফ্যাসিবাদ কায়েমের চেষ্টা করছে, প্রয়োজনে তাদেরও রুখে দেওয়া হবে। দেশে আর কোনো চাঁদাবাজ, দখলদার বা তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে দেওয়া হবে না। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনী ব্যবস্থা ও যৌক্তিক সংস্কার সম্পন্ন না করে কোনো নির্বাচন আয়োজন করা যাবে না— এটি কারো চাপে নয়, হতে হবে জাতীয় স্বার্থে।

আজ শুক্রবার (২৫ জুলাই) বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ‘জুলাই চেতনার বাস্তবায়নে গণহত্যার বিচার, শহীদ পরিবার পুনর্বাসন ও বৈষম্যহীন ইনসাফভিত্তিক কল্যাণরাষ্ট্র গঠনের’ দাবিতে ইসলামী যুব আন্দোলনের ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিক উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন নেতারা।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর, পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম। আরও বক্তব্য রাখেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মহাসচিব মাওলানা ইউনুস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, কে এম আতিকুর রহমান এবং যুব আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি রেজাউল করীম বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ে আমাদেরকে বলা হয়েছে, আমরা নাকি মূর্খ। কিন্তু আমি দস্তখত করতে জানি, পড়তেও পারি এবং পড়াতেও পারি। তাহলে আমি কীভাবে মূর্খ? প্রকৃতপক্ষে যারা এসব বলে, তারাই জ্ঞানপাপী, তারাই প্রকৃত মূর্খ।’

চরমোনাই পীর বলেন, ‘বাংলাদেশে আজ সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ নেই। কিন্তু আমরা দেশপ্রেমিক, ইসলামের পতাকা নিয়ে আমরা সবসময় ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়েছি। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখন পর্যন্ত আমরা সংসদে কোনো দলীয় প্রতিনিধি পাঠাইনি। কারণ আমরা দুর্নীতিবাজ, খুনিদের কিংবা পাচারকারীদের সহযোগী হইনি।’

চরমোনাই পীর বলেন, ‘৫ আগস্টের পর দেশ গঠনের একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমি যুব সমাজকে বলব, তোমরা যদি ন্যায়ের পক্ষে আওয়াজ তোলো, আল্লাহর রহমতে এই দেশ একটি কল্যাণরাষ্ট্রে রূপান্তরিত হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা ক্ষমতার লোভী না, আমরা দেশপ্রেমিক হতে চাই।’

তিনি প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা নিরপেক্ষ থাকুন। কেউ বড় দল, কেউ ক্ষমতায় আসবে— এই ভাবনা বাদ দিন। আপনাদের দায়িত্ব দেশের প্রতি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যেন সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করে, সেই আহ্বান জানাই।’

সমাবেশে ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ চলে গেছে, এখন নতুন এক চাঁদাবাজ দল আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে। সেই দলের নাম বললেই ভয়? সেই দল বিএনপি। সত্য বলা এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোই হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিহাদ। ইসলামী আন্দোলনের কর্মীরা সেই জিহাদের জন্য প্রস্তুত।’

গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। অথচ তাদের নেতা-কর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে, কেউ গর্তে লুকিয়ে আছে। যারা দেশে আছে, তারাও পরিচয় দিতে ভয় পায়। আজকের যারা আমাদের দেশবিরোধী বলছে, জনগণ তাদেরকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন তারা হুমকি দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শক্তিশালী দল ছিল, কিন্তু তাদেরও ছেলেদের ধাওয়া খেয়ে পালাতে হয়েছে। যারা নিজেদের অন্তর্কোন্দলে ১১ মাসে ১৫০ কর্মী খুন করেছে, তারা কীভাবে দেশ চালাবে? চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিপরায়ণ নেতৃত্ব ইসলামি আন্দোলন মেনে নেবে না।’

সমাবেশ শেষে গত ২১ মাইলস্টোন কলেজের শিক্ষার্থী অভিভাবকদের দোয়া তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনার মধ্য দিয়ে সমাবেশ সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button