শিরোনাম

‘সিদা ৫৫৫’ জাতের ধান চাষ করে পেলেন স্মার্ট কৃষকের পরিচিতি

‘সিদা ৫৫৫’ জাতের ধান চাষ করে পেলেন স্মার্ট কৃষকের পরিচিতি

নরসিংদীর রায়পুরার পূর্বহরিপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রহমান আউশ মৌসুমে ভিয়েতনামের উন্নত জাত ‘সিদা ৫৫৫’ ধান চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। মাত্র ২ বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ মণ ধান উৎপাদন করে তিনি এখন স্থানীয়ভাবে পরিচিত ‘স্মার্ট কৃষক’ হিসেবে।

আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, কম্বাইন্ড হারভেস্টারে পাকা ধান কাটছেন তিনি। আবদুর রহমান জানান, ভিয়েতনামী (সিদা ৫৫৫) উন্নত জাতের আগাম ধান। এ বছর ২ বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ মণ ধান ঘরে উঠেছে তাঁর। সঠিক সময়ে রোপণ, পরিচর্যা ও কৃষি অফিসের নিয়মিত পরামর্শেই এমন ফলন সম্ভব হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমি একই জমিতে বোরো, আউশ ও আমনের পাশাপাশি সরিষাও চাষ করি। এতে সারা বছর জমিতে কোনো না কোনো ফসল থাকে। আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতিতে কৃষি এখন লাভজনক পেশা হয়ে উঠেছে।’

আবদুর রহমানের সফলতা দেখে আশপাশের অনেক কৃষকও আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। একই গ্রামের কৃষক শাহজালাল বলেন, ‘আগে আউশের ফলন কম হওয়ায় ভয় পেতাম। এবার ১ বিঘা জমিতে ১৮ মণ ধান পেয়েছি। আগামী দিনে আরও বেশি জমিতে চাষ করব।’

স্থানীয় বাসিন্দা বিদ্যুৎ বলেন, ‘আগে এ মৌসুমে জমি পড়ে থাকত। এখন অনেকেই আউশে ঝুঁকছেন। এটা আমাদের গ্রাম ও অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।’

রায়পুরা উপজেলার কৃষি অফিস জানায়, চলতি মৌসুমে আউশ ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৪০ হেক্টর। এর মধ্যে ৭৩২ হেক্টরে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে ব্রি ধান-৪৮, ব্রি ধান-৯৮ ও ‘সিদা ৫৫৫’ জাত। সরকারি প্রণোদনার আওতায় উপজেলার ৫৫০ জন কৃষককে বিনা মূল্যে আউশ ধানের বীজ, ডিএপি ও এমওপি সার সরবরাহ করা হয়েছে। এতে কৃষকের উৎসাহ যেমন বেড়েছে, তেমনি মাঠে সফলতার দৃশ্যও চোখে পড়ছে।

রায়পুরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আবদুর রহমানের সফলতা এখন অন্য কৃষকদের জন্য অনুকরণীয়। তাঁকে দেখে অন্য কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। একই জমিতে ফসল ঘুরিয়ে চাষাবাদ করলে মাটি উর্বর থাকে, উৎপাদন খরচ কমে এবং আয় বাড়ে। কৃষকদের আধুনিক কৃষিপদ্ধতি, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ ও সময়মতো পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে রায়পুরায় আউশ ধানের রেকর্ড ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।’



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button