ফোরদো আগেই খালি করেছে ইরান, প্রমাণ মিলছে স্যাটেলাইট চিত্রে


যুক্তরাষ্ট্রের হামলার আগেই ইরানের ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনা থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়েছে ইরান। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে এমনটাই বলছেন বিশ্লেষকেরা। পাহাড়ের ভেতরে গড়ে ওঠা এই গোপন ও কড়া নিরাপত্তাবেষ্টিত পরমাণু জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্রের একাধিক প্রবেশপথে মাটি জমে থাকতে দেখা যাচ্ছে, যা হামলার আশঙ্কায় সুরক্ষা জোরদারের ইঙ্গিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুন তোলা স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, অন্তত ১৬টি ডাম্প ট্রাক ও মাটি সরানোর ভারী যন্ত্র (আর্থমুভার) প্রবেশপথের কাছে সারিবদ্ধভাবে রাখা। পরদিন, ২০ জুনের ছবিতে দেখা যায়, টানেলগুলোর প্রবেশপথের কিছু অংশ মাটি দিয়ে আচ্ছাদিত এবং ডাম্প ট্রাকগুলো সেগুলোর দিকে চলছে। পাশেই আর্থমুভার যন্ত্র দিয়ে মাটি তোলা হচ্ছে।
ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনাটি একটি পর্বতের অভ্যন্তরে, যা স্বাভাবিক বোমা হামলা থেকে সুরক্ষার জন্যই অনেক গভীরে নির্মিত। মূল চেম্বারগুলো মাটির অন্তত ৮০ থেকে ৯০ মিটার (প্রায় ২৬০ থেকে ৩০০ ফুট) নিচে অবস্থিত বলে ধারণা করা হয়।
বিশ্লেষক ও ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, এই ধরনের স্থাপনায় হামলা চালানোর সক্ষমতা কেবল যুক্তরাষ্ট্রেরই আছে। যুক্তরাষ্ট্রের ভান্ডারে থাকা বাংকার বাস্টার বোমাই কেবল এত গভীরে হামলা চালাতে পারে।
গত ১৩ জুন ইসরায়েলের ইরানে হামলা শুরুর পর থেকেই আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্র। ইরানের অন্যতম এই পারমাণবিক কেন্দ্রটিকে ধ্বংস করতে শুরু থেকেই মরিয়া নেতানিয়াহু। একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রকে এখানে হামলা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রও হামলা চালাতে পারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এমন ইঙ্গিত দিচ্ছিল কয়েক দিন ধরেই। তাই, সর্বোচ্চ সতর্কতাস্বরূপ আগেই ফোরদো খালি করা হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
অবশ্য আজ রোববার ফোরদো, নাতানজ ও ইস্পাহানে হামলার পর ইরানি কর্মকর্তারা বলেছেন, বিশেষ করে ফোরদো আগেই খালি করা হয়েছে। আর মার্কিন বোমা কোনো অপূরণীয় ক্ষতিও হয়নি। এই ক্ষয়ক্ষতি দ্রুতই মিটিয়ে নিতে পারবে ইরান।
গতকাল শনিবার দুই মার্কিন থিংক ট্যাংকও জানিয়েছিল, তাদের মূল্যায়ন বলছে, ইরান ফোরদো থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।