শিরোনাম
ইউরোপ পাঠানোর নামে মিশরে নিয়ে জিম্মি করতেন তাঁরা, দেড় কোটি টাকাসহ পাঁচজন ধরাডিগ্রি শেষ, তবুও ছাত্রনেতা! শিক্ষার্থীদের ক্ষোভে সরগরম হাতেম আলী কলেজরাজধানীর খিলক্ষেতে মাইক্রোবাস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র-গুলি উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৪ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে জুলিয়াস সিজারের করা রিট খারিজনারায়ণগঞ্জে আজমেরী ওসমানের সহকারী ইভনকে কুপিয়ে হত্যাছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি-জিএস প্রার্থীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিজেবলড, অভিযোগ শিবিরেরওগাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ‘পাকিস্তান ম্যাচ বয়কট করলে ভারতকে শাস্তি দিত আইসিসি’১৫ বছরে অর্থনীতি ও রাজনীতিকে ধ্বংস করেছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ: মির্জা ফখরুলযুক্তরাষ্ট্রে ১৮ লাখ ডলারে লবিং ফার্ম নিয়োগ করল ভারত

এক মাসে সেই বিদ্যালয়ের ৭ ছাত্রীর বিয়ে

জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার যমুনা নদীর দুর্গম মধ্যবর্তী অঞ্চলের সাপধরী উচ্চবিদ্যালয়ের সাত ছাত্রীর বাল্যবিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। গত এক মাসে পরিবারের চাপে এই ছাত্রীরা বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হয়েছে। যে বয়সে তাদের পড়ালেখা ও খেলাধুলায় মগ্ন থাকার কথা, সেই বয়সেই তাদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সংসারের বোঝা।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন করার চেষ্টা করলেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না এই বাল্যবিবাহ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো অভিভাবকই কথা বলতে রাজি হননি।

বিদ্যালয় সূত্র জানায়, সাপধরী উচ্চবিদ্যালয়টি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৯৮ জন শিক্ষার্থী এখানে পড়ালেখা করে। গত এক মাসে এই বিদ্যালয়ের সাতজন ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির দুজন ছাত্রীর মধ্যে একজনের, সপ্তম শ্রেণির ১৫ জন ছাত্রীর মধ্যে তিনজনের, অষ্টম শ্রেণির ১২ জন ছাত্রীর মধ্যে একজনের এবং নবম শ্রেণির পাঁচজন ছাত্রীর মধ্যে দুজনের বিয়ে হয়েছে।

সাপধরী উচ্চবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মানিকুল ইসলাম বলেন, ‘এমনিতেই আমাদের বিদ্যালয়টি দুর্গম অঞ্চলে অবস্থিত। এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম, আর ছাত্রীর সংখ্যা আরও কম। আমরা অভিভাবকদের বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করছি, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। তারপরও আমাদের চেষ্টা অব্যাহত আছে।’

সাপধরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম মণ্ডল বলেন, ‘এলাকাটি দুর্গম হওয়ায় এখানকার মানুষজন অনেকটা অসচেতন। তারা যেন মেয়ে বিয়ে দিয়ে তাড়াতাড়ি মুক্তি পেতে চায়। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

সাপধরী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার ও কাজী এ কে এম আব্দুর নূর বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত বয়স না হলে আমরা কোনো বিয়ের নিবন্ধন করি না। কীভাবে এই সাত ছাত্রীর বাল্যবিবাহ সম্পন্ন হয়েছে, তা আমার জানা নেই।’

সাপধরী ইউনিয়ন বিট পুলিশের বিট কর্মকর্তা ও ইসলামপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘আমি সপ্তাহখানেক আগে এখানে দায়িত্ব নিয়েছি। এই বাল্যবিবাহের ঘটনা আমার জানা নেই। তবে বাল্যবিবাহের খবর পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি এবং আইনত অপরাধ। এই সমস্যা দূর করতে হলে অভিভাবকসহ সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে। এই সাত ছাত্রীর বিয়ের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, এই বিদ্যালয়টিতে বেলা ১টার পর থেকেই শিক্ষার্থীরা বাড়ি ফিরে যায়। নিয়ম অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ক্লাস চলার কথা থাকলেও এটিই যেন বিদ্যালয়টির অঘোষিত নিয়মে পরিণত হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট শিক্ষকেরা মূল ফটকে তালা দিয়ে শিক্ষার্থীদের আটকে রাখার চেষ্টা করলে তারা হট্টগোল শুরু করে এবং শেষ পর্যন্ত তাদের ছুটি দিতে শিক্ষকেরা বাধ্য হন। এ নিয়ে গত ২৭ আগস্ট আজকের পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে ‘১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না’ শিরোনামে খবর প্রকাশ হলে আলোচনার সৃষ্টি হয়।


ক্রাইম জোন ২৪

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button