চবির প্রশাসনিক ভবনের নাম পরিবর্তন, ভিসির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে হুমকির অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রশাসনিক ভবনের নামফলক মুছে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। পরিবর্তিত নামফলকের ছবি তোলায় দুই ছাত্রীর বাবা-মাকে ডাকার হুমকির অভিযোগ উঠেছে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহইয়া আক্তারের বিরুদ্ধে।
গতকাল শনিবার বিকেলে প্রশাসনিক ভবনের নাম লাল রঙে কেটে ‘নিয়োগ বাণিজ্যের জমিদার ভবন’ লিখে দেন অধিকারসচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী।
উপাচার্যের হুমকির বিষয়ে প্রথম নারী শিক্ষার্থীর বক্তব্য, ‘আমি শুধু লেখা দেখে ছবি তুলছিলাম। উপাচার্য স্যার আমার আইডি কার্ড নিয়ে বলেন, “তোমাদের পরিবারকে ডাকব।” অথচ আমি কিছুই লিখিনি। তিনি বলেন, “দাঁড়িয়ে দেখা মানেই সমান অপরাধী। তোমার পরিবারকে ডেকে এমনভাবে আপ্যায়ন করব, চা খাওয়াব, যাতে তারা খুশি হয়ে যাবেন।” কিন্তু স্যারের এই কথা আমার কাছে হুমকি মনে হয়েছে।’
দ্বিতীয় নারী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কেবল ছবি তুলছিলাম, তখন আমাদের ডেকে জিজ্ঞেস করা হয়, আমরা লেখাটি লিখেছি কি না। অস্বীকার করলে আইডি কার্ডের ছবি তোলা হয়। পরে জোরাজুরি করলে ছবি ডিলিট ও কার্ড ফেরত দেওয়া হয়।’
জানতে চাইলে উপাচার্য গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আইডি কার্ড শিক্ষার্থীর পরিচয়, সেটি নেওয়ার অধিকার আমার রয়েছে। কোথায় নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে যদি প্রমাণ দিতে না পারে, তবে অভিভাবককে ডাকব। এখানে হুমকি দেওয়ার কী আছে?’
প্রশাসনিক ভবনে এই নাম লেখার সময় নিয়োগ বাণিজ্যের প্রমাণ চাইলে সেখানে উপস্থিত কোনো শিক্ষার্থী এর প্রমাণ দিতে পারেননি। এ সময় কয়েকজন শিক্ষার্থী বেশ কিছুক্ষণ সহকারী প্রক্টর নুরুল হামিদের সঙ্গে উচ্চ স্বরে চিল্লাচিল্লি করেন। শিক্ষকের সঙ্গে এমন বাজে ব্যবহারের কারণে আজ দুপুরে (রোববার) প্রতিবাদ সমাবেশ ডেকেছেন ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
ভবনের নাম পরিবর্তনের সময় উপস্থিত ছিলেন শাখা গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক ধ্রুব বড়ুয়া, নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
কর্মসূচিতে শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর আহ্বায়ক জশদ জাকির বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগ ও প্রশাসনের জবাবদিহিতায় কয়েক দিন ধরে আমরা আন্দোলন করে যাচ্ছি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল আমাদের গ্রাফিতি অঙ্কন ও দেয়াললিখন কর্মসূচি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা জেনেছি, প্রশাসনিক ভবনে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে। তাই এটি করেছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. কোরবান আলী বলেন, ‘আমি জানতে পেরে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করতে গিয়েছিলাম যে কেন তারা এটি করছে। তারা জানাল, প্রশাসন আমাদের কোনো কথা শোনেনি, তাই প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তারা এটি লিখেছে।’
ক্রাইম জোন ২৪