শিরোনাম

গৌরনদী জামদানি মেলায় সিন্ডিকেটের খপ্পর

১০ টাকার ফি আদায়ে ফুঁসছে জনতা!"

গৌরনদী জামদানি মেলায় সিন্ডিকেটের খপ্পর

বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী জামদানি মেলায় এই বছর প্রথমবারের মতো দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিজনের জন্য নির্ধারিত ১০ টাকার এই ফি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও দর্শনার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। মেলার এমন সিদ্ধান্তে ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষদের মনোভাব বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

মেলার প্রবেশ ফি চালুর বিষয়টি অনেকের কাছে অপ্রত্যাশিত। স্থানীয়রা বলছেন, এটি শুধু তাদের আর্থিকভাবে চাপ দিচ্ছে না, বরং মেলার প্রাণশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে। বহু বছর ধরে মেলায় প্রবেশ ছিল বিনামূল্যে, যেখানে সাধারণ মানুষ পরিবারসহ নির্বিঘ্নে অংশগ্রহণ করতে পারত।

এক স্থানীয় বাসিন্দা জানালেন, “জামদানি মেলা শুধু কেনাকাটার স্থান নয়, এটি আমাদের জন্য একটি মিলনমেলা। এবার ফি নির্ধারণের কারণে অনেকেই আসতে পারেনি। ১০ টাকা অনেকের কাছে ছোট পরিমাণ মনে হলেও, এটি আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জন্য বিব্রতকর।”

গৌরনদী জামদানি মেলায় সিন্ডিকেটের খপ্পর

মেলার আয়োজকদের একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ সংগ্রহের নামে মেলাকে বাণিজ্যিকীকরণের অভিযোগ রয়েছে। অনেকে মনে করছেন, এই অর্থ আদায়ের মাধ্যমে শুধু আয়োজকদের স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে, যা মেলার মূল উদ্দেশ্য ও ঐতিহ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

মেলায় দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় জামদানি ব্যবসায়ী এবং অন্যান্য বিক্রেতারা হতাশ। তাদের মতে, আগের মতো ভিড় না থাকায় বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। এক ব্যবসায়ী বললেন, “এখন মানুষ শুধু ঢুঁ মেরে চলে যাচ্ছে। আগে যেভাবে বিক্রির চাপ থাকত, এবার তা নেই। ফি’র কারণে মানুষ আসছে না।”

মেলার প্রবেশ ফি নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের পরও স্থানীয় প্রশাসন এখনও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। প্রশাসন বলছে, মেলার ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে এই ফি চালু করা হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষ এই যুক্তি মানতে নারাজ।

জামদানি মেলা শুধু স্থানীয় অর্থনীতি নয়, বরং বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্য। কিন্তু মেলার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে এর মূল আবেদন নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের মতে, মেলার আসল চেতনা পুনরুদ্ধার করতে আয়োজকদের জনগণের মতামত বিবেচনা করতে হবে।

ঐতিহ্যের মেলাকে সবার জন্য উন্মুক্ত রাখতে ফি প্রত্যাহারসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠছে। জনগণের অংশগ্রহণই পারে মেলার ঐতিহ্য ও আনন্দ ধরে রাখতে।

আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button