পানি পানের সময় গোঁফ লাগলে তা কি হারাম?


আমাদের মাঝে অনেকেই গোঁফ বড় ও স্টাইল করে রাখেন। স্বাভাবিকভাবে গোঁফ রাখা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। তবে নিয়মিত গোঁফ ছোট করা বা ছাঁটা, নাভি ও বগলের নিচের অবাঞ্চিত লোম পরিস্কার করা যেমন স্বাভাবিক পরিচ্ছন্নতার অন্তর্ভুক্ত, একইসঙ্গে মহানবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পূর্ববর্তী সব নবী-রাসূলদের সুন্নত।
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ৫টি কাজ ফিতরতের (মানুষের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার) অন্তর্ভুক্ত; খতনা করা, নাভির নিচের পশম কাটা, নখ কাটা, বগলের পশম উপড়ে ফেলা এবং গোঁফ ছাঁটা। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আরেকটি বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা দাড়ি লম্বা করো, গোঁফ খাটো করো। (সহিহ বুখারি)
তাই নিয়মিত গোঁফ ছাটা উচিত। গোঁফ চেঁছে ফেলা এবং ছোট করে ছেটে রাখা উভয়ই জায়েজ। গোঁফ ঠোঁটের ওপরে উঠে যাওয়ার মতো বড় রাখা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় কাজ। কিন্তু এ বিষয়ে একটা ভুল ধারণা অনেকের মধ্যে আছে। অনেকে মনে করেন, গোঁফ যদি খাটো না করা হয় আর পানি পান করতে গিয়ে পানি গোঁফে লাগে, তাহলে ওই পানি নাপাক হয়ে যায়। ওই পানি পান করা হারাম হয়ে যায়। এ ধারণার একেবারেই অমূলক। এর কোনো ভিত্তি নেই। গোঁফ তো নাপাক কিছু নয় যে গোঁফে পানি লাগলে ওই পানি নাপাক হয়ে যাবে। গোঁফ ছোট রাখা আবশ্যক এটা ঠিক আছে, কিন্তু গোঁফ বড় রাখলে এবং তাতে খাবার-পানীয় লাগলে সেগুলো হারাম হয়ে যাবে শরিয়তে এ রকম ধারণার কোনো ভিত্তি নেই।
লক্ষ্যণীয়, প্রতি সপ্তাহে জুমার গোসলের আগে নখ কাটা, গোঁফ ছাঁটা, নাভি ও বগলের নিচের অবাঞ্চিত লোম পরিস্কার করা উচিত। প্রতি সপ্তাহে সম্ভব না হলে প্রতি ২ সপ্তাহে একবার, এর চেয়েও বিলম্ব হলে সর্বোচ্চ ৪০ দিনে যেন একবার অবশ্যই গোঁফসহ সব অবাঞ্চিত লোম পরিষ্কার করা হয়। এর চেয়ে দেরি করা মাকরুহ।
আনাস (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নখ ও গোঁফ কাটা এবং বগলের চুল উপড়ানো ও নাভির নিচের পশম পরিষ্কারের জন্য সময় নির্ধারণ করে দিয়েছেন যে, তা যেন ৪০ রাতের বেশি না রাখা হয়। (সহিহ মুসলিম)
তাই জুমার দিন উত্তমরূপে গোসল করার পাশাপাশি গোঁফ ছাঁটা, নখ কাটা, অবাঞ্চিত লোম পরিস্কার করা ইত্যাদি পরিচ্ছন্নতার দিকেও বিশেষ মনেযোগ দেওয়া কর্তব্য।
ইয়া আল্লাহ! আমাদের সবাইকে নিজ নিজ সৌন্দর্য ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি খেয়াল রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।