শিরোনাম

যারা সত্য প্রকাশ করে, তাদের অবস্থা তুহিনের মতো হয়: মানববন্ধনে সাংবাদিকদের ক্ষোভ

যারা সত্য প্রকাশ করে, তাদের অবস্থা তুহিনের মতো হয়: মানববন্ধনে সাংবাদিকদের ক্ষোভ

বিগত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজসহ নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে লিখতে গিয়ে নির্যাতন, হুমকি ও মামলার শিকার হতে হয়েছে সাংবাদিকদের। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও এক অন্যায় কর্মকাণ্ডের ভিডিও করতে গিয়ে নির্মমভাবে প্রাণ হারান গাজীপুরের সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। যাঁরা সত্য প্রকাশ করেন, তাঁদের তুহিনের মতো পরিণতি ভোগ করতে হয়। সাংবাদিকেরা কোনো আমলেই নিরাপদ নন।

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আজ শুক্রবার বিকেলে তুহিন হত্যায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তাদের বক্তব্যে এমন ক্ষোভই ফুটে ওঠে। ‘বিক্ষুব্ধ সাংবাদিক সমাজ’-এর ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

গাজীপুর নগরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩৮) কুপিয়ে হত্যা করে একদল দুর্বৃত্ত। দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন তিনি। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামে। তাঁকে হত্যার একটি ভিডিও গতকাল রাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় আজ সকালে নিহত সাংবাদিকের বড় ভাই মো. সেলিম বাদী অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নগরের বাসন থানায় মামলা করেন। এখন পর্যন্ত এই হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ। তবে সিসি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার ভিডিওতে তুহিনকে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করতে যাদের দেখা গেছে, তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

আজ সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা প্রশ্ন তোলেন, ‘আমরা কোন বাংলাদেশে আছি? এটাই কি নতুন বাংলাদেশের উদাহরণ, যেখানে অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ সংবাদ করলে যে কেউ চাইলে সাংবাদিককে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে? গতকালকের ঘটনায় দেখা গেল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা দুর্বল। আগে সাংবাদিকদের হুমকি দিতে দেখতাম। এখন সরাসরি বিদায় করে দেয়। আগে বলত–“দেখে নিবো”। এখন সন্ত্রাসীরা দেখে নেয়।’

কর্মসূচিতে এটিএন নিউজের সাংবাদিক আলী আসগর ইমন বলেন, ‘সাংবাদিক দুই ধরনের। এক–যারা তাঁবেদারি, চামচামি ও উৎকোচ গ্রহণ করে। অন্যরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য প্রকাশ করে। যারা সত্য প্রকাশ করে, তাদের অবস্থা তুহিনের মতো হয়।’

সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার দায় রাষ্ট্রকেই নিতে হবে বলে এ সময় মন্তব্য করেন আলী আসগর ইমন।

তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্র যুগের পর যুগ সাংবাদিকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে ভঙ্গ করেছে। সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা, নিরাপত্তা, সুরক্ষা, ওয়েজবোর্ড দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু বাস্তবায়ন করেনি। যদি প্রকাশ্যে এভাবেই কুপিয়ে হত্যা করা হয়, তাহলে গুণী সাংবাদিকেরা এ দেশে থাকবেন না।’

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন এশিয়ান টিভির সাংবাদিক জসীম উদ্দিন, আমার দেশ পত্রিকার সাংবাদিক আশরাফুল আমিন, রাজধানী টিভির শাহ আলম সাগর, একুশে টিভির শফিকুল ইসলাম, দৈনিক ইনকিলাবের তাসকিয়ান জাহান মিতু প্রমুখ।



আরও দেখান

সম্পর্কিত খবর

Back to top button