সাংবাদিক তুহিন হত্যার ফুটেজ দেখে চার আসামি গ্রেপ্তার


গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত এক নারীসহ ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর পুলিশ। ঘটনার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাদের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। ফুটেজে দা, ছুরি ও চাপাতি হাতে যাদের দেখা গেছে, গ্রেপ্তারকৃতদের তিনজন তাদের মধ্যে ছিল।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে, ঘটনার শুরুতে ভিডিওতে যে নারীকে দেখা গেছে, যাকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনা; সেই নারী। তার নাম গোলাপি। এ ছাড়া ফুটেজে চাপাতি হাতে (দাড়িওয়ালা এবং মাথায় ক্যাপ পরা) কোপানোর জন্য যাকে দৌড়াতে দেখা যায়, সেই ব্যক্তি ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান। অপরজন ফুটেজে যাকে সাদা সার্ট ও জিনসের প্যান্ট পরা চাপাতি হাতে দাঁড়ানো, সে স্বাধীন। অপর আসামির নাম আল আমিন। তাদের মধ্যে ফয়সাল ওরফে কেটু মিজান ও গোলাপি স্বামী-স্ত্রী।

ওই ব্যক্তিদের শুক্রবার আলাদা সময়ে মহানগরীর সদর থানা থানাধীন সালনা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) তাহেরুল হক চৌহান।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, সাংবাদিক তুহিন হত্যার পর থেকেই পুলিশের একাধিক টিম বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছিল। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার পর আসামিদের শনাক্ত করা এবং তাদের অবস্থান জানার জন্য চেষ্টা অব্যাহত ছিল। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘তদন্তের স্বার্থে আরও অনেক কিছু এখন বলা যাচ্ছে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করা যায় জড়িত সবাইকে দ্রুতই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

প্রসঙ্গত, গাজীপুর মহানগরীর ব্যস্ততম চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে একটি মার্কেটের ভেতর প্রকাশ্যে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার ছিলেন। তিনি ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের হাসান জামালের ছেলে। তিনি স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

জিএমপির বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্কমর্তা (ওসি) শাহীন খান জানান, সাংবাদিক তুহিন হত্যার ঘটনায় বাসন থানায় দুটি মামলা হয়েছে। এর একটি মামলার বাদী হয়েছেন নিহত সাংবাদিক তুহিনের বড় ভাই মো. সেলিম। অপর একটি মামলার বাদী তুহিন হত্যার আগে সংঘটিত আরেকটি হামলার ঘটনায় আহত বাদশা মিয়ার ভাই। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।
ওসি আরও বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিষয়ে যাচাই করা হচ্ছে। উক্ত ঘটনায় তাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তাদের এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হতে পারে। তদন্তের প্রয়োজনে এখনই তাদের নাম-পরিচয় দিতে পারছি না।