স্বামীর গলায় বঁটি চালিয়ে থানায় স্ত্রীর ফোন, ‘আমি আত্মসমর্পণ করব, আমাকে নিয়ে যান’


‘আমি ধারালো বঁটি চালিয়ে স্বামীর গলা কেটে ফেলেছি। আমি আত্মসমর্পণ করব। আমাকে পুলিশ পাঠিয়ে থানায় নিয়ে যান।’ গতকাল রোববার দিবাগত ভোররাত ৫টার দিকে এক নারীর এমন ফোনকল পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় গাজীপুরের শ্রীপর থানা-পুলিশ।
আহত ব্যক্তিকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। একই সঙ্গে তাঁর স্ত্রীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামে।
আহত ব্যক্তির নাম মো. আলমগীর (৩০)। তিনি ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাকচর গ্রামের মো. জামাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি স্ত্রী মোছা. ফাতেমা খাতুনকে (২৮) নিয়ে শ্রীপুরের তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের বাড়িতে ভাড়ায় থাকেন। ফাতেমা ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার চন্দ্রকান্দা গ্রামের আব্দুর রশিদের মেয়ে। আলমগীর-ফাতেমা দম্পতির আট বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।
আলমগীরের ছোট ভাই মো. হৃদয় মিয়া বলেন, ‘অভিযুক্ত ফাতেমার সঙ্গে ১০ বছর আগে ভাইয়ের বিয়ে হয়। তাঁদের আট বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকে তাঁদের পরিবারে কলহ লেগে থাকত। এর জেরে গতকাল ভোররাত ৫টার দিকে আমার ঘুমন্ত ভাইকে বঁটি দিয়ে গলা কেটে ফেলেন ভাবি। এ সময় ভাইয়ের আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে এমন অবস্থা দেখে আমাদের খবর দেন।’
হৃদয় মিয়া আরও বলেন, ‘পুলিশ এসে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ভাইকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় মাওনা চৌরাস্তা এলাকার আলহেরা হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থার অবনতি দেখে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। ভাইয়ের শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। পুলিশ ভাবিকে থানায় নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করা হয়েছে।’
আটকের আগে ফাতেমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি কী কারণে এটা করেছি, আপনাকে বললে কী সমস্যার সমাধান হবে? এত দিনে যেহেতু হয়নি, তাই বলে লাভ নেই।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ভোররাতে এক নারী থানায় ফোনকল করে বলেন, ‘আমি ধারালো বঁটি চালিয়ে স্বামীর গলা কেটে ফেলেছি। আমি আত্মসমর্পণ করব। আমাকে পুলিশ পাঠিয়ে থানায় নিয়ে যান।’ এমন ফোনকল পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে অভিযুক্ত নারীকে থানায় নিয়ে আসা হয়। ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা বঁটি জব্দ করা হয়েছে। আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন।
আব্দুল বারিক আরও বলেন, এ ঘটনায় আহত ব্যক্তির ছোট ভাই মো. হৃদয় মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। আটক নারীকে ওই মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।